OMG! অনলাইন জুয়ার বলি কলেজ ছাত্রী, সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা খুইয়ে করলো আত্মহত্যা

মোবাইলে অনলাইন জুয়ার নেশায় সর্বস্বান্ত হয়ে এক কলেজ ছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। উত্তর দিনাজপুরের হেমতাবাদ থানার ভরতপুরের তিলান গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। বাবা-মায়ের জমানো প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা খুইয়ে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন অলকা বর্মন (২১) নামে ওই ছাত্রী। রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

মৃত অলকা বর্মন কালিয়াগঞ্জ কলেজের স্নাতক স্তরের কলা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, অলকার বিয়ের কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল এবং দুর্গাপুজোর পরই তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এর জন্য তাঁর অভিভাবকরা প্রায় সাড়ে তিন ভরি সোনার গয়নাও তৈরি করে রেখেছিলেন। পরিবারের অভিযোগ, অনলাইন জুয়া তাঁদের সব স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।

অলকার মা সুফলা বর্মন জানান, তাঁর মেয়ের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কন্যাশ্রী প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা জমা ছিল। এছাড়া, তাঁর স্বামীর কৃষকবন্ধু প্রকল্প এবং তাঁর নিজের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের টাকা-সহ মোট সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা এটিএমের মাধ্যমে তুলে জুয়ায় খরচ করে ফেলেছিলেন অলকা। পরিবারের অজান্তেই এই বিপুল পরিমাণ টাকা তিনি খরচ করেন। অলকা কিছুদিন আগে কলকাতায় হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে গিয়েছিলেন। সেখানেও তিনি জুয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার করেন। পাওনাদারদের টাকা শোধ করতে না পেরে গত ৪ অগাস্ট তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন।

অলকার মা বলেন, “কলকাতায় ধার করা টাকা শোধ করার ভয়েই মেয়ে বাড়ি ফিরে আসে। আমরা ওকে বুঝিয়ে সৎপথে ফেরানোর চেষ্টা করছিলাম।” কিন্তু শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি নিজের ঘরে বিষপান করেন। তাঁকে দ্রুত রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শনিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

পেশায় টাইলসমিস্ত্রি অলকার বাবা রাজেন বর্মন বলেন, “আমাদের পরিবারে অলকাই ছিল প্রথম কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। যদি আমি প্রথম থেকে মেয়েকে শাসন করতাম, সব আবদার না মেটাতাম, তাহলে হয়তো এভাবে অকালে চলে যেত না।” এই ঘটনায় রায়গঞ্জ থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy