শহরের অভিজাত এলাকা বালিগঞ্জের এক বহুতল আবাসন চত্বর থেকে উদ্ধার হলো কলকাতা হাইকোর্টের এক বর্ষীয়ান আইনজীবীর রক্তাক্ত দেহ। পুলিশ জানিয়েছে, চারতলায় নিজের ফ্ল্যাটের খোলা জানালা থেকে পড়ে তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা নিছক দুর্ঘটনা, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে, তা খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃত আইনজীবীর নাম কৌস্তভ দাস, বয়স ৫২ বছর। তিনি কলকাতা হাইকোর্টের একজন সুপরিচিত এবং অভিজ্ঞ আইনজীবী ছিলেন। তার পরিবারে স্ত্রী এবং একমাত্র সন্তান রয়েছেন। জানা গেছে, তাদের ফ্ল্যাটের জানালাগুলি স্লাইডিং ধরনের এবং মেরামতের কাজের জন্য সেগুলির গ্রিল খোলা ছিল। শনিবার রাতে কৌস্তভবাবু সেই খোলা জানলার পাশে বসেছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি নিচে পড়ে যান বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিকট শব্দ শুনে আবাসনের অন্য বাসিন্দারা ছুটে আসেন এবং কৌস্তভবাবুকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। দ্রুত তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, জানলার কাছে বসে থাকা অবস্থায় হঠাৎ মাথা ঘুরে যাওয়া বা ভারসাম্য হারানোর ফলেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। তবে পুলিশ কোনো সম্ভাবনাই উড়িয়ে দিচ্ছে না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে।
এদিকে, আবাসনের বাসিন্দাদের একাংশ এই ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, বহুতলের জানলার গ্রিল খোলা অবস্থায় দীর্ঘ সময় ফেলে রাখা অত্যন্ত বিপজ্জনক। মেরামতির সময় পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকলে হয়তো এই দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।
কৌস্তভ দাসের মৃত্যুতে কলকাতা হাইকোর্টের আইনি মহলে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার সহকর্মীরা জানিয়েছেন, তিনি অত্যন্ত দক্ষ এবং পেশাদার একজন আইনজীবী ছিলেন। একইসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনে তিনি একজন শান্ত ও নম্র মানুষ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। তবে এই ঘটনা বহুতলে বসবাসকারী মানুষের নিরাপত্তা সচেতনতার অভাবকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে।