NRC-SIR নিয়ে লেখার অধিকার কেড়ে নিল সরকার! কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের গোপন আঁতাত? ক্ষুব্ধ মানবাধিকার কর্মী কমল শূর

দীর্ঘদিন ধরে বাংলায় এনআরসি (NRC) নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চললেও, এবার এই ইস্যুতেই রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, SIR (Selective Identity Register) এবং NRC-এর বিরুদ্ধে লাগাতার প্রতিবাদ ও লেখালেখি করায় ‘NO NRC’ MOVEMENT-এর সংগঠক, মানবাধিকার কর্মী কমল শূরের ফেসবুকে লেখার অধিকার কেড়ে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

ফেসবুক ব্লক: কেন্দ্রের পথে রাজ্য?
ফেসবুক কর্তৃপক্ষ কমল শূরকে লিখিতভাবে জানিয়েছে যে, কোনো স্ট্যান্ডার্ড ভাঙার জন্য নয়, বরং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘আইন প্রয়োগকারী সংস্থার’ (Law Enforcement) আইনি নির্দেশে ভারতের কোথাও আর তাঁর কোনো পোস্ট কেউ দেখতে পাবে না। ফেসবুক এ-ও জানিয়েছে, সরকারের নির্দেশ মানতে তারা বাধ্য।

এই ঘটনায় কমল শূর সরাসরি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর স্পষ্ট অভিযোগ—এই সরকার এনআরসি-র মতো স্পর্শকাতর ইস্যু নিয়ে দ্বিচারিতা করছে। তারা একদিকে বিরোধিতা করছে, আবার অন্যদিকে প্রতিবাদের অধিকার ক্ষুন্ন করছে।

যে দুটি বিষয়ে চলছিল লাগাতার প্রতিবাদ
কমল শূর মূলত দুটি বিষয়ে লাগাতার লেখালেখি করছিলেন:

১. কেরলের প্রস্তাব: সম্প্রতি কেরল বিধানসভা SIR (Selective Identity Register)-এর বিরুদ্ধে সর্বদলীয় প্রস্তাব পাশ করেছে। ‘NO NRC’ MOVEMENT-এর পক্ষ থেকেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ফেসবুকে একই প্রস্তাব গ্রহণের দাবি জানানো হচ্ছিল। SIR বিরোধী প্রস্তাব গ্রহণের দাবিতে কলেজ স্ট্রিটে অবস্থান বিক্ষোভও করেছিল সংগঠনটি।

২. SIR আসলে NRC: কমল শূর এবং তাঁর সঙ্গীরা লাগাতার প্রচার করছিলেন যে SIR হলো ঘুরিয়ে NRC-কেই আনার কৌশল। তাঁরা SIR-এর বিপজ্জনক দিক তুলে ধরে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানাচ্ছিলেন।

কমল শূরের দাবি, এই দুই বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা প্রতিবাদকে কৌশলে থামিয়ে দিল রাজ্য সরকার।

জনসাধারণের প্রতিক্রিয়া: রাজ্য-কেন্দ্রের গোপন আঁতাত?
এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় সাধারণ মানুষ সরাসরি রাজ্য সরকারকে নিশানা করেছেন। তাদের প্রশ্ন, যে রাজ্য সরকার এতদিন এনআরসি ইস্যুতে সরব ছিল, তারাই এখন কেন প্রতিবাদের অধিকার লঙ্ঘন করছে? অনেকেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্য এবং কেন্দ্রের মধ্যে গোপন আঁতাতের ইঙ্গিত দেখছেন। তাঁদের মতে, বিহারে ৪৭ লক্ষের বেশি মানুষকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পর এখন তাদের টার্গেট বাংলা ও বাঙালি।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy