পশ্চিমবঙ্গে আজ থেকে শুরু হওয়া SI-এর আবহে ফের একবার NRC (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) ইস্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রাজ্য-রাজনীতি। খড়দহের পানিহাটিতে এক ব্যক্তির আত্মহত্যার ঘটনায় তাঁর সুইসাইড নোটকে হাতিয়ার করে আসরে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিলেন, বাংলায় কোনওভাবেই NRC হতে দেওয়া হবে না।
গতকাল খড়দহের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পানিহাটি মহাজ্যোতি নগরের ৫৭ বছর বয়সী বাসিন্দা প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। তাঁর রেখে যাওয়া সুইসাইড নোটে চাঞ্চল্যকরভাবে লেখা— “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।”
এই মর্মান্তিক ঘটনা সামনে আসার পরই গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এক্স হ্যান্ডলে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্টতই বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, এই ঘটনা তাদের “ভয় ও বিভাজনের রাজনীতির” চরম নিদর্শন।
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিজেপি বছরের পর বছর ধরে নিরপরাধ নাগরিকদের NRC-এর হুমকি দিয়ে হয়রানি করছে। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং ভোট পাওয়ার জন্য নিরাপত্তাহীনতাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, বিজেপি সাংবিধানিক গণতন্ত্রকে এমন এক “কঠোর আইন-শাসনে” পরিণত করেছে, যেখানে মানুষকে তাঁদের অস্তিত্বের অধিকার নিয়েই সন্দিহান করে তোলা হচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মৃত্যুকে বিজেপির “বিষাক্ত প্রচারের” প্রত্যক্ষ ফল বলে অভিহিত করেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, যাঁরা দিল্লিতে বসে দেশপ্রেমের বুলি আওড়াচ্ছেন, তাঁরাই সাধারণ ভারতীয়দের এমন হতাশায় ঠেলে দিয়েছেন যে তাঁরা নিজেদের ভূমিতেই মরতে বাধ্য হচ্ছেন এই ভয়ে যে তাঁদের বিদেশি বলে ঘোষণা করা হবে।
কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এই “হৃদয়হীন খেলা” অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দৃঢ়ভাবে বলেন, “বাংলা কখনোই NRC (জাতীয় নাগরিক পঞ্জি) হতে দেবে না।” তিনি বাংলাকে মা-মাটি-মানুষের স্থান বলে অভিহিত করে স্পষ্ট বার্তা দেন, ঘৃণার রাজনীতি যারা করে, বাংলা তাদের নয়।
মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “দিল্লির জমিদাররা” যেন স্পষ্টভাবে শুনে নেয় যে, বাংলা প্রতিরোধ করবে, বাংলা রক্ষা করবে এবং বাংলা জয়ী হবে। তিনি প্রতিজ্ঞা করেন, বাংলা বাংলার জনগণের মর্যাদা ও আত্মপরিচয় কেড়ে নিতে দেবে না।