বিনিয়োগের বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে ভারতীয় জীবন বীমা কর্পোরেশন (এলআইসি)-এর বিভিন্ন স্কিম বরাবরই জনপ্রিয়। এলআইসি-র তেমনই একটি আকর্ষণীয় স্কিম হলো ‘জীবন আনন্দ পলিসি’, যেখানে দৈনিক অল্প পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করে একটি বড় তহবিল গঠন করা সম্ভব। এই তহবিল ভবিষ্যৎ শিক্ষা, বিবাহ বা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।
পলিসিটির বৈশিষ্ট্য:
জীবন আনন্দ পলিসি একটি টার্ম ম্যাচিউরিটি প্ল্যান, যা ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যেকোনো ব্যক্তি নিতে পারেন। পলিসির মেয়াদ ১৫ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত হতে পারে। এই স্কিমে বীমার ন্যূনতম পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা, তবে সর্বোচ্চ কোনো সীমা নেই। বিনিয়োগকারীরা তাঁদের প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো বড় তহবিল গঠনের জন্য এই পলিসিতে বিনিয়োগ করতে পারেন।
কীভাবে তৈরি হবে বড় তহবিল?
ধরা যাক, একজন ২১ বছর বয়সী ব্যক্তি ৩০ বছর মেয়াদে এই পলিসিটি নিচ্ছেন এবং ২০ লক্ষ টাকার একটি তহবিল তৈরি করতে চান। সেক্ষেত্রে তাঁকে প্রতি মাসে প্রায় ৫,৯২২ টাকা বা দৈনিক প্রায় ১৯৭ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। প্রথম বছরের পর দ্বিতীয় বছর থেকে এই প্রিমিয়াম কিছুটা কমে মাসিক ৫,৭৯৫ টাকা বা দৈনিক ১৯৩ টাকা হয়ে যাবে।
মৃত্যু এবং বোনাসের সুবিধা:
যদি কোনো পলিসিধারক পলিসির মেয়াদ চলাকালীন মারা যান, তাহলে নমিনি ব্যক্তি মূল বীমাকৃত অর্থের ১২৫% অথবা মৃত্যু পর্যন্ত প্রদত্ত প্রিমিয়ামের ১০৫% পাবেন। এই পলিসিতে বোনাসের সুবিধাও রয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি ৩০ বছর ধরে দৈনিক প্রায় ২০০ টাকা বিনিয়োগ করেন, তাহলে তিনি প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বোনাস পেতে পারেন। তবে, বোনাস সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের জন্য এলআইসি-এর নিকটস্থ শাখায় যোগাযোগ করা প্রয়োজন।
অন্যান্য সুবিধা ও প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার পদ্ধতি:
এই পলিসির একটি উল্লেখযোগ্য সুবিধা হলো, এর বিপরীতে ঋণও নেওয়া যায়। প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্য মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধ-বার্ষিক বা বার্ষিক – এই চারটি বিকল্প উপলব্ধ রয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী প্রিমিয়াম পরিশোধ করতে পারেন।
জীবনের গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য পূরণের জন্য এই পলিসিটি একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হতে পারে। এই স্কিমের মাধ্যমে সুরক্ষিত ভবিষ্যতের পাশাপাশি একটি বড় অঙ্কের তহবিল গঠনের সুযোগ পাওয়া যায়। আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য, বিনিয়োগকারীদের নিকটস্থ এলআইসি শাখায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।