বিশ্বজুড়ে সোনার দামে এক সপ্তাহে ১৬৯০ টাকার রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে, যার ফলে রাজধানী দিল্লিতে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ১,০৩,১৯০ টাকায় পৌঁছেছে। এই মূল্যবৃদ্ধি বিশ্বব্যাপী শুল্ক সংক্রান্ত জটিলতা এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ বিনিয়োগের প্রতি ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রতিফলন। মাত্র ছয় বছরে সোনার দাম ২০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে, যা এর স্থিতিশীলতাকে নতুন করে সামনে এনেছে।
দেশের প্রধান শহরগুলোতে সোনার দাম
রাজধানী দিল্লিতে ২৪ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ১,০৩,১৯০ টাকা, যেখানে ২২ ক্যারেট সোনার দাম ৯৪,৬০০ টাকা। মুম্বাই, চেন্নাই এবং কলকাতার মতো বড় শহরগুলোতেও একই প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। এই শহরগুলোতে ২২ ক্যারেট সোনার দাম প্রতি ১০ গ্রামে ৯৪,৪৫০ টাকা এবং ২৪ ক্যারেট সোনার দাম ১,০৩,০৪০ টাকা।
রুপোর দামেও রেকর্ড বৃদ্ধি
সোনার পাশাপাশি রুপোর দামও চড়া। এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতি কেজি রুপোর দাম ৪০০০ টাকা বেড়ে ১,১৭,০০০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার রুপোর দাম ১০০ টাকা বেড়ে ১,১৬,৫০০ টাকা হয়েছিল, যা শনিবারও একইরকম ছিল।
সোনার দাম বৃদ্ধির মূল কারণ
সোনার এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির পেছনে প্রধান কারণ হলো মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক সংক্রান্ত নতুন সিদ্ধান্ত। আমেরিকা সুইৎজারল্যান্ড থেকে আমদানি করা এক কেজি সোনার বারের উপর ৩৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যা বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করছে। সুইৎজারল্যান্ড বিশ্বের বৃহত্তম সোনা পরিশোধন কেন্দ্র, এবং এই শুল্কের কারণে আমেরিকা ও অন্যান্য দেশগুলোতে সোনার সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দাম বাড়ছে।
ভারতের বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। সুইস সোনার মূল্যবৃদ্ধির কারণে এর সরবরাহ কমে যাওয়ায় ভারতেও সোনার দাম বেড়েছে। চলতি বছরে ভারতে সোনার দাম ২৭ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। শেয়ার বাজারে শুল্কজনিত অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ বিকল্প হিসেবে সোনাকে বেছে নিচ্ছেন, যা দাম বাড়ার আরও একটি কারণ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যারা সোনা কেনার পরিকল্পনা করছেন, তারা আপাতত অপেক্ষা করতে পারেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। যদি আদালত এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে, তাহলে সোনার দাম কিছুটা কমতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে, সোনার মূল্যবৃদ্ধির এই ধারা অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।