রাজ্য সরকারি কর্মীদের বর্ধিত ডিএ (Dearness Allowance) সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টে ফের অবস্থান স্পষ্ট করে একটি নতুন পিটিশন জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার টানা তিনদিন বিচারপতি সঞ্জয় কারোল এবং বিচারপতি প্রশান্তকুমার মিশ্রের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলার পর আগামী মঙ্গলবার এর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই পিটিশনে জানানো হয়েছে যে, ডিএ-এর হার কোনো নির্দিষ্ট সূচক বা সূত্রের উপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয় না, বরং এটি রাজ্যের আর্থিক সক্ষমতা এবং রাজস্ব নীতির ওপর নির্ভরশীল। পিটিশনে আরও বলা হয়েছে যে, বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সমস্ত বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শুনানির সময়, আদালত জানতে চেয়েছিল যে ডিএ অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (AICPI) অনুযায়ী নির্ধারিত হয় কি না। আদালত আরও প্রশ্ন তোলে যে, যদি তাই হয়, তবে দিল্লিতে বঙ্গভবন এবং চেন্নাইয়ের ইউথ হোস্টেলে কর্মরত রাজ্য সরকারি কর্মীরা যে হারে ডিএ পান, রাজ্যের কর্মীরা সেই হারে কেন পান না? আদালত এই বৈষম্যের কারণ জানতে চেয়েছিল, কারণ এই মামলার রায় সারাদেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এই প্রেক্ষাপটে, রাজ্য সরকার তাদের নতুন পিটিশনে ‘রেগুলেশন ফর পে অ্যান্ড অ্যালাওয়েন্স (রোপা), ২০০৯’-এর উল্লেখ করে জানায় যে, এটি কেবল বেতন কাঠামো সংশোধনের জন্য একটি আইনগত কাঠামো প্রদান করে। এটি ডিএ বা অন্য কোনো ভাতার অধিকার তৈরি করে না। রাজ্য আরও যুক্তি দিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের ডিএ-এর হারের সাথে সমতা বজায় রাখতে তারা বাধ্য নয়, কারণ ডিএ-এর হার রাজ্যের আর্থিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।
নতুন পিটিশনে দিল্লি ও চেন্নাইয়ের কর্মীদের ভিন্ন হারে ডিএ পাওয়ার কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের যুক্তি হলো, এই দুই শহরে জীবনযাত্রার ব্যয় বেশি, তাই সেখানে কর্মরত কর্মীদের বেশি হারে ডিএ দেওয়া হয়। চেন্নাইয়ে কর্মরত কর্মীরা তামিলনাড়ু সরকারের কর্মচারীদের ডিএ হার অনুসরণ করেন, এবং দিল্লির বঙ্গভবনে কর্মরত কর্মীরা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের হারে ডিএ পান, কারণ সেখানে জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেশি।