বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনা (SIR) প্রক্রিয়ার আগে আজ থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে বুথ-লেভেল অফিসারদের (BLO) চূড়ান্ত পর্বের প্রশিক্ষণ। সেদিনই চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলার পরিবেশ দেখা গেল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে।
নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম প্রক্রিয়ার কাজ শুরু করার কথা BLO-দের। তার আগেই তাঁরা সরাসরি বলে দিলেন, “আমাদের অন-ডিউটি না দিলে আমরা যাব না।” পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে, মধ্যস্থতায় এগিয়ে আসতে হয় পুলিশকে।
BLO-দের ক্ষোভ ও সরাসরি প্রশ্ন:
প্রশিক্ষণ শেষে BLO-দের কণ্ঠস্বরে ছিল তীব্র ক্ষোভ ও আশঙ্কা। তাঁদের বক্তব্যগুলি নিম্নরূপ:
কাজের সময় নিয়ে আপত্তি:
কেউ বলছেন, “স্কুলে কি একটা কাজ নাকি, নানারকমের কাজ, তারপর বিএলও-র ডিউটি আমরা পালন করব কীভাবে?” আবার কারও বক্তব্য, “স্কুলের কাজ সেরে বেরোতেই বিকেল। সাড়ে চারটেয় অন্ধকার হয়ে যায়। তারপর আমরা কি অন্ধকারে লোকের বাড়ি বাড়ি ঘুরব?”
অন-ডিউটি দাবি:
এক BLO বলেন, “আমাদের স্পষ্ট করে বলা হল না, বিএলও-র কাজ আমরা অন-ডিউটি পাব কি না। অন-ডিউটি ছাড়া সম্ভব নয়।”
শিক্ষার দায়িত্ব:
তাঁদের প্রশ্ন, “স্কুলে পড়ানো, ছাত্রছাত্রীদের প্রতি দায়িত্ব-কর্তব্য তো রয়েছেই। সেই দায়িত্ব সামলাবে কে!”
নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ:
সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হলো নিরাপত্তা। বিশেষ করে মহিলা BLO-দের প্রশ্ন: “রাতের বেলা আমরা যে বাড়ি বাড়ি ঘুরব, নিরাপত্তা কোথায়? আমাদের নিরাপত্তা দেওয়া হোক। দরকারে কেন্দ্রীয় বাহিনী।”
কারণ, বাড়ি বাড়ি ঘুরে নথি সংগ্রহ করার কাজ শুরুর আগেই লাগাতার শাসক শিবিরের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বিএলও-দের:
কোচবিহার জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন হুমকি দিয়েছেন, ভোটার তালিকা নিয়ে এলাকায় গেলে BLO-দের বেঁধে রাখতে হবে।
বাসন্তীর তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলের গলাতেও BLO-দের গাছে বেঁধে রাখার হুঁশিয়ারির কথা শোনা গেছে।
প্রশাসনিক আশ্বাস ও দাবি:
এই আবহেই সুরক্ষা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে BLO- ঐক্যমঞ্চ। সংবেদনশীল বুথে BLO-দের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়ে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে (CEO) চিঠি দিয়েছে এই সংগঠন।
যদিও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বার্তা নির্বাচন কমিশনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানাচ্ছে, নোডাল অফিসার আশ্বাস দিয়েছেন যে নিরাপত্তা দেবে রাজ্য সরকার।