দেশের বিমান পরিবহণ ইতিহাসে নজিরবিহীন ‘অপারেশনাল বিপর্যয়ের’ মুখে পড়েছে ইন্ডিগো (IndiGo)। গত চারদিনের সমস্যা চরমে পৌঁছে শুক্রবার প্রায় ৭০০টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে দেশের এই অন্যতম বৃহৎ বিমান সংস্থাটি। এর ফলে দেশজুড়ে বিমান চলাচল কার্যত থমকে যাওয়ায় যাত্রীদের পকেটে চরম আঘাত হানছে টিকিটের আকাশছোঁয়া দাম।
আকাশছোঁয়া ভাড়া, তবুও টিকিট বিক্রি:
একাধিক বিমান বাতিলের জেরে টিকিটের দাম হু হু করে বেড়েছে। সাধারণ যাত্রীদের কাছে বিমানের ভাড়া এখন রীতিমতো দুঃস্বপ্ন। নিউদিল্লি-চেন্নাই এক পিঠের ভাড়া পৌঁছেছে ৬৫,৯৮৫ টাকায় (প্রায় ৬৬ হাজার টাকা)। একইভাবে, নিউদিল্লি-মুম্বইয়ের ভাড়া দাঁড়িয়েছে ৩৮,৬৭৬ টাকা এবং দিল্লি-কলকাতা রুটের ভাড়াও ৩৮,৬৯৯ টাকা ছাড়িয়েছে। এত অত্যাধিক মূল্য সত্ত্বেও টিকিট বিক্রি হওয়াটা এই মুহূর্তে দেশের অভ্যন্তরে বিমান পরিষেবার করুণ চিত্র তুলে ধরছে।
দিল্লি এয়ারপোর্টে পরিষেবা বন্ধ, ক্ষমা চাইল ইন্ডিগো:
এই কঠিন পরিস্থিতির মাঝে শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত দিল্লি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ রাজধানী থেকে ইন্ডিগোর সমস্ত বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে। এর পাশাপাশি, বিমান সংস্থাটি যাত্রীদের দুর্ভোগের জন্য গভীরভাবে ক্ষমা চেয়েছে। ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যারা ৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে টিকিট কেটেছেন, তাদের টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়া হবে। তারা যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ করেছে, বাতিল হওয়া বিমানের জন্য বিমানবন্দরে ভিড় না করতে, কারণ বহু বিমানবন্দরেই এখন চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দিচ্ছে।
কারণ জানাল সংস্থা, হস্তক্ষেপ DGCA-এর:
ইন্ডিগো স্বীকার করেছে, লোকবল বা কর্মী-সংখ্যার ঘাটতির (staff shortage) কারণেই এই ধরনের বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়েছে। নভেম্বরের শেষ দিক থেকেই তাদের নেটওয়ার্কে এই ধরনের সমস্যা বাড়ছিল। ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্ট জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে বেশ কিছুটা সময় লাগবে। এই বিপর্যয়ের মাঝে বিমান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ডিজিসিএ (DGCA) পরিস্থিতি সামাল দিতে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে। তারা সাময়িকভাবে বিমান চালকদের প্রতি সপ্তাহে একদিনের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং বিমান সংস্থাগুলিকে নতুন রোস্টার তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক (MoCA) ডিজিসিএ-কে টিকিটের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির উপর কড়া নজর রাখতেও নির্দেশ দিয়েছে।