৯৫০ কোটির ক্ষতি! পাহাড়ে মমতার সফর ঘিরে জল্পনা, ত্রাণ বিলির ফাঁকে কি বড় রাজনৈতিক বার্তা?

শেষ মুহূর্তে বদলে গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের সূচি। মিরিকের পরিবর্তে লাগাতার বৃষ্টি ও ভয়াবহ ভূমিধসে পাহাড়ের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা, দার্জিলিংয়ের সুখিয়াপোখরিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানা গিয়েছে, তিনি কার্শিয়াং থেকে সড়কপথে ওই এলাকায় যাবেন এবং স্থানীয় ত্রাণ শিবিরে যোগ দেবেন।

ত্রাণ বিলি ও সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র:
বিপর্যয় মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। সুখিয়াপোখরিতে ত্রাণ বিতরণের পাশাপাশি তিনি বিপর্যয়ে প্রাণ হারানো পরিবারগুলির হাতে তুলে দেবেন সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র। উল্লেখ্য, সোমবারও জলপাইগুড়ির নাগরাকাটায় বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সেখানে মৃত দশজনের পরিবারের হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছিলেন। এরপর সুখিয়াপোখরি থেকে তিনি সরাসরি দার্জিলিঙে যাবেন।

জিটিএ-এর রিপোর্টে ৯৫০ কোটি টাকার ক্ষতি:
পাহাড়ে ভূমিধস ও বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর হাতে তুলে দেবে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)। জিটিএ প্রধান অনীত থাপা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক বিবরণ পেশ করবেন বলে সূত্র মারফত জানা গেছে। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, লাগাতার বৃষ্টিতে দার্জিলিং, কালিম্পং ও আশপাশের পাহাড়ি অঞ্চলে রাস্তাঘাট, সেতু, ঘরবাড়ি ও ফসলের বিপুল ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ে মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯৫০ কোটি টাকা বলে অনুমান করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন বলেই প্রশাসনিক মহল মনে করছে।

রাজনৈতিক ইঙ্গিতও স্পষ্ট:
এক সপ্তাহের মধ্যে এটি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বিতীয় উত্তরবঙ্গ সফর। শুধু বিপর্যয় তদারকি নয়, এই সফরের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে পাহাড়ের রাজনৈতিক সমীকরণে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘন ঘন উপস্থিতি বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ এই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না যে, মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ফাঁকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বৈঠক আয়োজিত হতে পারে। আপাতত পাহাড়ের সব রাজনৈতিক শিবিরের দৃষ্টি এই সফরের দিকেই নিবদ্ধ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy