আপনার হাতে চেক রয়েছে, কিন্তু সেটি ভাঙিয়ে টাকা পেতে আর দু’দিন অপেক্ষা করতে হবে না। কাল, অর্থাৎ ৪ অক্টোবর থেকে চেক ক্লিয়ারিং (Check Clearing) সংক্রান্ত নিয়মে আসছে এক বড়সড় পরিবর্তন। এইচডিএফসি (HDFC) এবং আইসিআইসিআই (ICICI) সহ দেশের প্রথম সারির বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি কাল থেকে একই দিনে চেক ক্লিয়ারিং পরিষেবা চালু করতে চলেছে।
ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) দ্রুত ও নিরাপদ পেমেন্টের জন্য ঘোষিত আপডেটেড সেটলমেন্ট কাঠামোর অধীনেই এই পদক্ষেপ। নতুন পদ্ধতির ফলে, ৪ অক্টোবর থেকে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া চেকগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিষ্পত্তি হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পজিটিভ পে: ৫০ হাজার টাকার বেশি চেকের জন্য জরুরি
এই দ্রুত পরিষেবা পেতে গ্রাহকদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মেনে চলতে হবে। ব্যাঙ্কগুলি তাদের গ্রাহকদের পর্যাপ্ত ব্যালান্স রাখার এবং চেকের সমস্ত বিবরণ নির্ভুলভাবে পূরণ করার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে চেক বাউন্স বা বিলম্ব এড়ানো যায়।
বিশেষত, গ্রাহকদের নিরাপত্তার উন্নতির জন্য ব্যাঙ্কগুলি ‘পজিটিভ পে সিস্টেম’ (Positive Pay System) ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছে। এই ব্যবস্থায়, যাচাইকরণের জন্য চেকের গুরুত্বপূর্ণ বিবরণ আগে থেকেই ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয়।
আবশ্যিক: আরবিআই ৫ লক্ষ টাকার বেশি অঙ্কের চেকের জন্য পজিটিভ পে বাধ্যতামূলক করেছে।
সুপারিশ: ৫০,০০০ টাকার বেশি অঙ্কের চেকের জন্য এই পদ্ধতি দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করা হয়েছে।
৫০,০০০ টাকার বেশি অঙ্কের চেক জমা দেওয়ার অন্তত ২৪ কার্যঘণ্টা আগে গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর, চেক নম্বর, তারিখ, পরিমাণ এবং প্রাপকের নাম ব্যাঙ্কে জানাতে হবে (নির্দিষ্ট আঞ্চলিক ইমেল ঠিকানায়)।
চেক জমা দেওয়ার সময় এই বিবরণগুলি ব্যাঙ্কের রেকর্ডের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। যদি তথ্য মিলে যায়, তবেই চেকটি ক্লিয়ার হবে; অন্যথায়, অনুরোধটি প্রত্যাখ্যান করা হবে।
কীভাবে কাজ করবে এই নতুন পদ্ধতি?
বর্তমানে ব্যাঙ্কগুলিতে চেক ট্রাঙ্কেশন সিস্টেম (CTS) ব্যবহার করা হয়। এতে চেকের একটি ইলেকট্রনিক ছবি এবং বিবরণ ড্রয়ি ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়। ফলে চেকের ফিজিক্যাল স্থানান্তরের প্রয়োজন হয় না। তবুও, ড্রপ বক্স বা এটিএম-এ জমা দেওয়া হলে নিষ্পত্তি হতে সাধারণত দুই কার্যদিবস সময় লাগে। নতুন ‘একই দিনে ক্লিয়ারিং’ পরিষেবা এই সময়সীমাকে কয়েক ঘণ্টায় নামিয়ে আনবে।
আরবিআই-এর সময়সীমা: নিরবচ্ছিন্ন ক্লিয়ারিং-এর এই প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে ২০২৫ সালের ৪ অক্টোবর থেকে, এবং দ্বিতীয় ধাপ চালু হবে ২০২৬ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে।
ভুল এড়াতে কী করবেন?
গ্রাহকদের দ্রুত ক্লিয়ারিং পেতে চেকের বিবরণ নির্ভুল রাখতে হবে। ব্যাঙ্কগুলির পরামর্শ:
টাকার পরিমাণে মিল: কথায় ও সংখ্যায় উল্লেখিত টাকার পরিমাণ অবশ্যই মিলতে হবে।
বৈধ তারিখ: চেকের তারিখ বৈধ হতে হবে।
নো ওভাররাইটিং: প্রাপকের নাম বা পরিমাণে কোনওরকম কাটাকুটি বা ওভাররাইটিং করা চলবে না।
স্বাক্ষর: ড্রয়ারের স্বাক্ষর অবশ্যই ব্যাঙ্কের রেকর্ডের সঙ্গে মিলতে হবে।
এই নতুন নিয়মের ফলে চেক মারফত লেনদেন আরও দ্রুত, নিরাপদ এবং কার্যকরী হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখল আরবিআই, কতটা প্রভাব পড়বে আপনার ইএমআইয়ে?