বীমার বিপুল অঙ্কের টাকা হাতানোর জন্য নিজের বাবা, মা এবং প্রথম স্ত্রীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। উত্তরপ্রদেশের সম্ভল এলাকার এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় ধৃতের নাম বিশাল সিংঘল (৩৭)। তার এই ভয়ঙ্কর অপরাধের পর্দাফাঁস হয়েছে তার চতুর্থ স্ত্রী শ্রেয়ার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে।
পুলিশ জানিয়েছে, হাপুরের বাসিন্দা বিশাল সিংঘল তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুন করার পর সেই মৃত্যুগুলিকে দুর্ঘটনা বলে সাজিয়েছিলেন। এর মাধ্যমে তাঁর লক্ষ্য ছিল ৫০ কোটি টাকার জীবন বীমার অর্থ হাতিয়ে নেওয়া। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইতিমধ্যেই বীমার দেড় কোটি টাকা পেয়েছেন বলেও জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত বিশালের পরিবারের একাধিক সন্দেহজনক মৃত্যু নিয়ে তাঁর চতুর্থ স্ত্রী শ্রেয়া পুলিশকে সতর্ক করেন। মিরাটের গঙ্গানগর এলাকার বাসিন্দা শ্রেয়াকে সম্প্রতি বিশাল মোটা অঙ্কের একটি বীমার কাগজে সই করার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
শ্রেয়া জানান, তিনি সম্ভল এলাকায় বীমা নিয়ে কিছু কেলেঙ্কারির কথা জানতে পারেন। এরপরই তাঁর স্বামীর পরিবারের একাধিক রহস্যজনক মৃত্যুর কথা মনে পড়ে। সেই মৃত্যুগুলির পিছনেও মোটা অঙ্কের বীমা জড়িত ছিল। নিজেরও একইরকম ‘দুর্ঘটনাজনিত’ মৃত্যু হতে পারে, এই আশঙ্কা করে তিনি বাপের বাড়ি চলে আসেন এবং পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে বীমার টাকার জন্য এই সিরিয়াল কিলিংয়ের তথ্য।
চলতি বছর এপ্রিলে মৃত্যু হয় বিশালের বাবা মুকেশ সিংঘলের। তাঁর নামে ৬৪টি বীমা পলিসি ছিল, যার মোট মূল্য ছিল ৫০ কোটি টাকা। অভিযোগ, এই টাকা হাতাতেই বিশাল বাবাকে খুন করে এবং সেটিকে দুর্ঘটনার সাজানো হয়।
একইভাবে, বিশাল তাঁর মা প্রভা দেবী এবং প্রথম স্ত্রী একতাকেও খুন করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সম্ভলের পুলিশ সুপার কৃষ্ণকান্ত বিষ্ণোই জানিয়েছেন, এলাকায় বীমা নিয়ে জালিয়াতি হচ্ছে জানার পরেই তাঁরা মানুষকে সতর্ক করতে শুরু করেন। জানুয়ারি মাসে তদন্ত শুরু করে পুলিশ দেখেছে, চারটি খুনকে দুর্ঘটনার আকার দেওয়া হয়েছিল বীমার টাকা হাতানোর জন্য। পুলিশের ধারণা, এর সঙ্গে একটি বড় চক্র জড়িত রয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে এই ক্ষেত্রে জালিয়াতির প্রমাণ মেলায়, পুরো ঘটনাটি তদন্তের জন্য হাপুরের পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হাপুরের পুলিশ সুপার কুঁয়ার জ্ঞানঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, এই ঘটনার তদন্ত নতুন করে শুরু হয়েছে এবং চক্রের বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।