গত ৩০ বছর ধরে দেশের আকাশে সূর্যের আলো কমার বিষয়ে একটি ভয়ঙ্কর রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। একটি নতুন গবেষণা অনুযায়ী, গত তিন দশক ধরে বছরের অধিকাংশ সময়ই ভারতের আকাশ মেঘলা থাকছে এবং রোদ ঝলমলে দিনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে। এই ‘ঘোলাটে আকাশ’ এখন ভারতের নিত্যসঙ্গী।
বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি (BHU), পুনের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজি এবং ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণায় এই উদ্বেগজনক চিত্র সামনে এসেছে। রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়েছে নেচারস সায়েন্টিফিক রিপোর্টসে।
দূষণই মূল কারণ, বাড়ছে উদ্বেগ
বিজ্ঞানীরা দেশের ৯টি প্রান্তের ২০টি আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণ করেছেন। তাঁদের প্রধান পর্যবেক্ষণ, দূষণের কারণেই এই সংকট তৈরি হচ্ছে। এর ফলে কৃষিক্ষেত্রে এবং সৌরশক্তি উৎপাদনে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
যদিও উত্তর-পূর্ব ভারতের কিছু অংশ ব্যতিক্রম, তবে উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের ছবিটা রীতিমতো ভয়ঙ্কর।
কোথায় কতটা কমল সূর্যালোক?
বিএইচইউ-এর বিজ্ঞানী মনোজ কে শ্রীবাস্তব সূর্যালোক কমার একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরেছেন:
উত্তর ভারতের সমভূমি: রোদ কমেছে সবচেয়ে বেশি, বছরে গড়ে ১৩.১ ঘণ্টা।
দেশের পশ্চিম উপকূল: সূর্যালোকের সময় কমেছে গড়ে ৮.৬ ঘণ্টা।
মধ্যবর্তী স্থলভাগ: কমেছে বছরে ৪.৭ ঘণ্টা।
পূর্ব উপকূল এবং দ্রাবিড়ীয় মালভূমি: রোদ ঝলমলে সময় কমেছে যথাক্রমে বছরে ৪.৯ ঘণ্টা এবং ৩.১ ঘণ্টা করে।
দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব: কৃষি ও সৌরশক্তি
সূর্যের আলো কমে যাওয়ার কারণে একাধিক ক্ষেত্রে তার সরাসরি প্রভাব পড়তে চলেছে।
সৌরশক্তি উৎপাদন: সৌর বিদ্যুতের উৎপাদন কমবে। যেহেতু ভারত বর্তমানে সৌরশক্তির উপর জোর দিচ্ছে, তাই এই পরিস্থিতি দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে পারে।
কৃষিক্ষেত্র: পর্যাপ্ত সূর্যালোক না পাওয়ায় চাষাবাদে সমস্যা বাড়বে। ফসলের গুণগত মান এবং ফলনও প্রভাবিত হতে পারে।
এই গবেষণাটি স্পষ্ট করছে যে, দ্রুত দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশের পরিবেশ ও অর্থনীতির উপর এর নেতিবাচক প্রভাব আরও বাড়তে থাকবে।