“২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাড়বে ট্যারিফ”-রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে ভারতকে ট্রাম্পের নতুন হুমকি

রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জেরে আবারও ভারতকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় পণ্যের উপর ‘কড়া ট্যারিফ’ বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ট্রাম্পের অভিযোগ, ভারত বিপুল পরিমাণে রাশিয়ার তেল কিনে তা বিক্রি করে মুনাফা লুটছে এবং ইউক্রেন সংকটের প্রতি উদাসীন।

মঙ্গলবার এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমার মাথায় বিষয়টি ঘুরছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আমি ভারতের ট্যারিফ অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারি।” এর আগেও তিনি ভারতের রুশ তেল কেনা নিয়ে বারবার আপত্তি জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের মতে, “ভারত যে শুধু রাশিয়ার থেকে তেল কিনছে তাই নয়, সেই তেল আবার বিক্রি করেও মুনাফা কামাচ্ছে।”

ভারতের কড়া প্রতিক্রিয়া:
ট্রাম্পের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে পাল্টা জবাব দিয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ট্রাম্পের মন্তব্যকে ‘অবিবেচকের মতো এবং ভিত্তিহীন’ বলে আখ্যা দিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রাম্পের এই মন্তব্য অযৌক্তিক, কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেই রাশিয়ার সঙ্গে বিপুল পরিমাণে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিদেশ মন্ত্রক আরও উল্লেখ করেছে যে, ২০২৩ সালে আমেরিকা মস্কোর সঙ্গে প্রায় ৩.৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করেছে, যখন রাশিয়ার উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। আমেরিকা এখনও রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম, প্যালাডিয়াম, রাসায়নিক এবং সার আমদানি করছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের রুশ বাণিজ্য নিয়ে সমালোচনা করাকে ‘দ্বিচারিতা’ বলে উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।

ভারত-রাশিয়া তেলের সম্পর্ক:
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর ইউরোপের দেশগুলি মস্কো থেকে তেল আমদানি কমিয়ে দেয়। সেই সুযোগে ভারত এবং চিন বিপুল পরিমাণে রুশ তেল কেনা শুরু করে। বর্তমানে রাশিয়া ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ।

রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া:
ট্রাম্পের এই হুমকির জবাবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এই ধরনের মন্তব্য আসলে এক প্রকারের হুমকি, যার মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন দেশের উপর চাপ তৈরি করে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নষ্ট করা। তিনি জানান, মস্কো এই ধরনের মন্তব্যকে গুরুত্ব দেয় না।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy