নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের বাগআঁচড়া পঞ্চায়েতে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে তীব্র সংকটে ভুগছেন সাধারণ মানুষ। প্রায় ১৫ বছর ধরে প্রয়াত বিধায়ক অজয় দে-র দেওয়া একটি অ্যাম্বুলেন্স জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে, স্থানীয় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র-এর একমাত্র অ্যাম্বুলেন্সটিও বিকল হয়ে আছে। ফলে, জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা টোটো কিংবা নিজেদের ভাড়া করা গাড়িতে করে হাসপাতালে যেতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে তুলছে।
জনপ্রতিনিধিদের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন
প্রয়াত বিধায়ক অজয় দে তার তহবিল থেকে জনসেবার উদ্দেশ্যে এই অ্যাম্বুলেন্সটি পঞ্চায়েতকে দিয়েছিলেন। কিন্তু গত দেড় দশক ধরে এটি পঞ্চায়েত চত্বরেই অবহেলায় পড়ে আছে, সচল হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই। স্থানীয়দের অভিযোগ, নাগরিকদের পরিষেবা দেওয়া জনপ্রতিনিধিদের কর্তব্য হলেও, এই বিষয়ে তাদের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট। তাদের প্রশ্ন, জনগণের ট্যাক্সের টাকায় কেনা একটি মূল্যবান অ্যাম্বুলেন্স বছরের পর বছর ধরে এভাবে নষ্ট হচ্ছে কেন? তাদের আশঙ্কা, এই অ্যাম্বুলেন্স যদি দ্রুত মেরামত না হয়, তবে ভবিষ্যতে এটি ভাঙাচোরা লোহার দরে বিক্রি করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, জনমনে সংশয়
ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাদের বিকল হওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি অল্প দিনের মধ্যেই সচল হয়ে ফিরে আসবে। এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে রোগীদের প্রয়োজন অনুযায়ী ১০২ অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা-র সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তবে স্থানীয় মানুষ এই আশ্বাসে সম্পূর্ণ ভরসা রাখতে পারছেন না। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে একটি অ্যাম্বুলেন্স অচল থাকার বিষয়টি তাদের মধ্যে প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে। তারা মনে করেন, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার না হলে জনমুখী প্রকল্পগুলো শুধু কাগজ-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সাধারণ মানুষের কোনো উপকারে আসবে না।
বাগআঁচড়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের একটাই চাওয়া— দ্রুত যেন এই দুটি অ্যাম্বুলেন্সই আবার রাস্তায় নামে এবং জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত হয়। এই ঘটনা আবারও গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর দুর্বল দিকটি তুলে ধরল।