একসময়ের দেশের শীর্ষ পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত জম্মু ও কাশ্মীরের উপত্যকার পর্যটন শিল্প আজ এক বড় সংকটের মুখে। মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর (Omar Abdullah) বক্তব্যে ফুটে উঠেছে এই গভীর হতাশার সুর।
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা, সীমান্তে সংঘর্ষ এবং ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় কাশ্মীরের অর্থনীতিকে বড় ধাক্কা দিয়েছে।
ওমর আবদুল্লাহ সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেন, “এই বছরটা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন ছিল। প্রথমে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা, তারপর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ। এরপর জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে ভয়াবহ বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় বিপুল ক্ষতি হয়েছে। পর্যটন শিল্প কার্যত থমকে গেছে।”
পর্যটক কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ, হোটেল মালিকরা চিন্তিত
কাশ্মীরের অর্থনীতির মূল স্তম্ভ পর্যটন। কিন্তু এ বছর নিরাপত্তা আশঙ্কা, আবহাওয়ার বিপর্যয় এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হোটেল বুকিং, ট্রাভেল এজেন্সি, হাউসবোট ব্যবসা—সবকিছুতেই চরম মন্দা দেখা দিয়েছে।
কাশ্মীরের হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মির ইমরান বলেন, “গত বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটক আগমন প্রায় ৬০ শতাংশ কম। বহু ছোট হোটেল বন্ধের মুখে। সরকার যদি ক্ষতিপূরণ ও প্রণোদনা না দেয়, তাহলে আগামী মৌসুমে আরও বড় বিপর্যয় দেখা দিতে পারে।”
পর্যটন খাতে যুক্ত স্থানীয় যুবক-যুবতীরাও এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
সংকট কাটাতে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচার
তবে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হাল ছাড়তে নারাজ। তিনি জানান, পর্যটন খাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বাজার: “বর্তমানে আমাদের একটি দল সিঙ্গাপুরে রয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া পর্যটনের বিশাল বাজার, আমরা সেই বাজার ধরার চেষ্টা করছি,” বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
দেশীয় প্রচার: এছাড়া, মুম্বই, দিল্লি, বেঙ্গালুরু, কলকাতা এবং আহমেদাবাদেও কাশ্মীর পর্যটনের প্রচার চালানো হচ্ছে।
ওমর আবদুল্লাহ মনে করেন, নতুন আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং উন্নত পরিকাঠামোর মাধ্যমে কাশ্মীরের পর্যটন ফের আগের জায়গায় ফিরবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সরকার এবং বেসরকারি সংস্থা একযোগে কাজ করলে আগামী বছরেই পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু প্রচারণা যথেষ্ট নয়। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও আস্থার পরিবেশ তৈরি করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
