হুগলিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ায় মইদুল মুন্সি নামে এক ব্যক্তির হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ তুলে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি বিজেপি এবং শুভেন্দু অধিকারীকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন, এমনকি শুভেন্দুকে ‘থার্ড বাচ্চা’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
ঘটনার সূত্রপাত হয় হুগলিতে, যখন শুভেন্দু অধিকারী একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে যান। সেই সময় মইদুল মুন্সি নামে এক ব্যক্তি তাঁকে দেখে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন বলে জানা গেছে। এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফিরহাদ হাকিমের দাবি, সেন্ট্রাল ফোর্স মইদুল মুন্সির উপর হামলা চালায় এবং তাঁর হাত ভেঙে দেয়।
এই ঘটনা নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেওয়ার জন্য একজন সাধারণ মানুষের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এটা বিজেপির স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রমাণ। ওরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, মানুষের কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করতে চায়।” শুভেন্দু অধিকারীকে উদ্দেশ্য করে ফিরহাদ আরও বলেন, “উনি নিজেকে খুব বড় নেতা মনে করেন, কিন্তু আসলে উনি একটা ‘থার্ড বাচ্চা’ ছাড়া আর কিছু নন। সামান্য একটা স্লোগান শুনেই এত রেগে যান যে মানুষকে মারধর করতে হয়!”
ফিরহাদ হাকিম প্রশ্ন তোলেন, বিজেপি কি চায় যে রাজ্যে শুধু তাদেরই স্লোগান শোনা যাবে? তিনি বলেন, “আমরা কি তাহলে ‘জয় শ্রী রাম’ ছাড়া অন্য কোনও স্লোগান দিতে পারব না? এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়, বাংলার মানুষ এই স্বৈরাচার মেনে নেবে না।” তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এই ঘটনার বিচার হবে এবং দোষীদের শাস্তি পেতে হবে।
অন্যদিকে, বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে এবং পাল্টা তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচারের অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, এই ঘটনা সাজানো এবং রাজ্যের শাসক দল রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে।
সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যখন রাজ্য রাজনীতি এমনিতেই উত্তপ্ত, তখন এই ঘটনা নতুন করে শাসক ও বিরোধী শিবিরের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে। মইদুল মুন্সির হাত ভাঙার অভিযোগ এবং ফিরহাদ হাকিমের আক্রমণাত্মক মন্তব্য রাজ্য রাজনীতিতে আরও উত্তাপ ছড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ঘটনার সত্যতা এবং এর পরবর্তী প্রতিক্রিয়া জানতে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা এখন পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন।