হিংসা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, আনে না কোনও পরিবর্তন!’ পাহালগাম হামলার জবাবে সরকারের পদক্ষেপে খুশি মোহন ভাগবত

দেশের নিরাপত্তা এবং প্রতিবেশী অঞ্চলে বেড়ে চলা অস্থিতিশীলতা নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত। বৃহস্পতিবার এক বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, নেপাল ও বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হিংসাত্মক রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা শুধু দেশকে দুর্বলই করে না, বরং এই পরিস্থিতি বিদেশি হস্তক্ষেপের সুযোগও তৈরি করে।

‘অরাজকতার ব্যাকরণ’: অসন্তোষ ও বিশৃঙ্খলা
মোহন ভাগবত তাঁর বক্তব্যে ড. বি.আর. আম্বেদকরের উদ্ধৃতি ব্যবহার করে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, “হিংসাত্মক উত্থান কোনো পরিবর্তন আনতে পারে না। এটি শুধুই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে—এটাই ‘অরাজকতার ব্যাকরণ’।”

প্রতিবেশী দেশের অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যখন নেতা জনগণের থেকে দূরে থাকেন, তখন অসন্তোষের বীজ জন্মায়। যা ঘটছে বাংলাদেশ ও নেপালে, তা কোনো পক্ষকেই উপকৃত করছে না।” তাঁর মতে, দেশের উন্নয়নশীল শক্তি যখন নিয়মিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ পদ্ধতিতে লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়, তখন দেশের নিজের শক্তি প্রয়োগের সুযোগও কমে আসে।

পাহালগাম হামলা ও ভারতের আদর্শ জবাব
দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সরকারের পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন আরএসএস প্রধান। তিনি ২২ এপ্রিলের পাহালগাম সন্ত্রাসী হামলার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে ২৬ জন ভারতীয় নিহত হয়েছিলেন।

ভাগবত বলেন, “জাতি শোকাহত ও ক্ষুব্ধ ছিল। তবে সরকার ও সশস্ত্র বাহিনী সম্পূর্ণ প্রস্তুতির সঙ্গে কার্যকর প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশের একতা, বাহিনীর সাহস এবং সরকারের সমন্বয়ই পরিস্থিতি মোকাবেলায় আদর্শ পরিবেশ তৈরি করেছে।” তিনি আরও মনে করিয়ে দেন, এই ঘটনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের প্রকৃত বন্ধুদের সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় থাকলেও দেশের নিরাপত্তা রক্ষায় সতর্ক থাকা অপরিহার্য।

নেপাল, নকশালবাদ ও জাতীয় সতর্কতা
প্রতিবেশী দেশ নেপালের অস্থিরতা শুধু নিরাপত্তার বিষয় নয়, এটি ভারতের মানুষের উপরও প্রভাব ফেলে বলে মন্তব্য করেন ভাগবত। তিনি বলেন, “অনেকেই আগে ভারতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাই এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও আমাদের আবেগিক সংযোগের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ।”

পাশাপাশি, তিনি নকশালবাদী আন্দোলনের ব্যর্থতার বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন: “অসামাজিক নকশালবাদের নীতি নির্মম ও শূন্য। সমাজ তা প্রত্যাখ্যান করেছে, আর নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।”

আরএসএস প্রধানের বক্তব্যে স্পষ্ট, অস্থিতিশীল প্রতিবেশী, অভ্যন্তরীণ চ্যালেঞ্জ এবং হিংসাত্মক নীতি দেশের শক্তি ও নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি। তাই রাষ্ট্রের সংহতি, সশস্ত্র বাহিনীর প্রস্তুতি এবং জনগণের সচেতনতা একসাথে থাকা এখন অগ্রাধিকার।

আপনার মতে, প্রতিবেশী দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা ভারতের নিরাপত্তার ওপর আর কী কী প্রভাব ফেলতে পারে?

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy