পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারী সুরক্ষা ইস্যুকে সামনে এনে দুর্গাপুরের জনসভা থেকে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আরজি কর থেকে কসবার মতো সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনাগুলি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকারে বেটিদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা লজ্জাজনক।” তিনি শাসকদলের বিরুদ্ধে অপরাধীদের আড়াল করার চেষ্টারও অভিযোগ আনেন।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বাংলার ঐতিহ্য এবং বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে একটি তীক্ষ্ণ বৈসাদৃশ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যে বাংলা ভারতের প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মভূমি, সেখানেই আজ মহিলা চিকিৎসকেরাও সুরক্ষিত নন। মোদী সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকারের কারণে পশ্চিমবঙ্গের বেটিদের সঙ্গে যা হচ্ছে তা বলার নয়। আজ পশ্চিমবঙ্গে হাসপাতালও মেয়েদের জন্য সুরক্ষিত নয়।” তিনি আরজি কর কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আপনারা দেখেছেন, যখন চিকিৎসক মেয়েটির সঙ্গে অত্যাচার হয়েছিল, তখন কী ভাবে তৃণমূল সরকার অপরাধীদের বাঁচাতে নেমে পড়েছিল।”
শুধু আরজি কর কাণ্ড নয়, সাম্প্রতিক কসবা ল’কলেজের ঘটনাও প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণের বিষয়বস্তু হয়। তিনি বলেন, “আরজি করের ঘটনা দেশ ভুলতে না ভুলতেই আরও একটি কলেজে আরও এক মেয়ের উপর ভয়ঙ্কর অত্যাচারের ঘটনা ঘটল। এই ঘটনাতেও যারা অভিযুক্ত তাদের যোগাযোগ রয়েছে তৃণমূলের সঙ্গে।” এই ঘটনাগুলোতে তৃণমূল নেতাদের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করে মোদী বলেন, “এই কলেজের ঘটনায় সামনে আসতেই তৃণমূলের বড় নেতা-মন্ত্রীরা অভিযুক্তদের পরিবর্তে নির্যাতিতাকেই দোষ দিচ্ছেন।” এই ধরনের ঘটনাকে তৃণমূলের “নির্মমতার সাক্ষী” বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের একসঙ্গে বাংলাকে এই নির্মমতা থেকে উদ্ধার করতেই হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যকে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে নারী ভোটারদের কাছে একটি আবেগপ্রবণ আবেদন হিসেবে দেখা হচ্ছে। নারী সুরক্ষা এবং আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে সামনে এনে বিজেপি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে চাপ বাড়াতে চাইছে। জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে একবার বিজেপিকে ক্ষমতায় এনে এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটানোর আর্জি জানান।
উল্লেখ্য, এই সভার মঞ্চ থেকেই অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলেন, “ময়দানে নামছি, গুলি চালালে চালান,” যা সভার রাজনৈতিক উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দেয়।