যদি এমনটা হত যে কলকাতা থেকে ট্রেনে উঠে মাত্র আড়াই ঘণ্টার মধ্যে দিল্লিতে পৌঁছনো যেত, অথবা প্রতিদিন হায়দরাবাদে অফিস করতে যাওয়া যেত, তাহলে কেমন হত? এই কল্পনা এখন বাস্তব হতে চলেছে বিশ্বের কিছু দেশে, কিন্তু ভারতে কবে তা সম্ভব হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কথা হচ্ছে ম্যাগলেভ ট্রেন নিয়ে, যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তির এক বিস্ময়।
ম্যাগলেভ ট্রেন কীভাবে কাজ করে?
ম্যাগলেভ নামটি এসেছে ‘ম্যাগনেটিক লেভিটেশন’ থেকে। এই ট্রেনে কোনো লোহার চাকা নেই এবং এটি কোনো সাধারণ রেললাইনের ওপর দিয়ে চলে না। এর প্রধান প্রযুক্তি হলো শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র, যার প্রভাবে ট্রেনটি লাইন থেকে কিছুটা উপরে ভেসে থাকে। এই ভাসমান অবস্থায় কোনো ঘর্ষণ না থাকায় ট্রেনটি অবিশ্বাস্য গতিতে চলতে পারে।
বিশ্বের দ্রুততম ট্রেন
বর্তমানে ম্যাগলেভ ট্রেনগুলি চীন ও জাপানের মতো দেশে চলাচল করে। জাপানের ম্যাগলেভ ট্রেন পরীক্ষামূলকভাবে ঘণ্টায় ৬০০ কিলোমিটারের বেশি গতি অর্জন করেছে বলে জানা যায়। অন্যদিকে, চিনের ম্যাগলেভ ট্রেন সর্বোচ্চ ঘণ্টায় ৪৩১ কিলোমিটার এবং জার্মানির তৈরি ম্যাগলেভ ট্রেন ঘণ্টায় ৪৯০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম। এই গতিতে চললে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার দূরের কলকাতা-দিল্লি যাত্রা আড়াই ঘণ্টারও কম সময়ে শেষ করা সম্ভব।
ভারতে এই মুহূর্তে ম্যাগলেভ ট্রেন চালু হওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই। এর কারণ হতে পারে প্রযুক্তিগত জটিলতা এবং এর উচ্চ নির্মাণ খরচ। তবে জাপান ও জার্মানির প্রযুক্তিতে তৈরি বুলেট ট্রেন ভারতে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতে প্রথম বুলেট ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা আছে, যার দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে গোটা দেশের মানুষ। ম্যাগলেভ ট্রেন ভবিষ্যতে ভারতের পরিবহন ব্যবস্থার চেহারা পাল্টে দিতে পারে, কিন্তু তার জন্য আরও অনেক অপেক্ষা করতে হবে।