হাই কোর্টের স্থগিতাদেশ, মহিলা CO-এর সঙ্গে ‘সংঘাতের’ জেরে বাতিন্ণ্ডা থেকে বদলি হওয়া রণিকোলের অর্ডারে ধাক্কা

দিল্লি হাই কোর্ট পাঞ্জাবের বাতিন্ণ্ডা থেকে উত্তরাখণ্ডের রানিখেতে এক মহিলা লেফট্যান্যান্ট কর্নেলের (Lt Colonel) বদলির আদেশে স্থগিতাদেশ জারি করেছে। তাঁর কমান্ডিং অফিসারের (CO), যিনি নিজেও একজন মহিলা অফিসার, সঙ্গে মতবিরোধের জেরেই এই বদলি হয়েছিল।

লেফট্যান্যান্ট কর্নেল মনালি শ্রীবাস্তব হাই কোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, Spouse Coordinated Posting (SCP) নীতি অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রী এক জায়গায় পোস্টিং-এ থাকার ১৮ মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁকে রানিখেতে বদলি করা হয়েছে, যা তাঁর ‘তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কমান্ডিং অফিসারের বিদ্বেষপূর্ণ (mala fide)’ কার্যকলাপের ফল।

অক্টোবর ২৮-এর নির্দেশে হাই কোর্ট স্পষ্ট উল্লেখ করেছে যে, স্বামী-স্ত্রীর এক জায়গায় পোস্টিং-এর মেয়াদ ১৮ মাসের কম করার অনুমতি ‘শুধুমাত্র অনিবার্য সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতা’ (unavoidable organisational constraints)-এর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।

আদালত আরও পর্যবেক্ষণ করেছে, “পিটিশনারকে রানিখেতে বদলির আদেশে এমন কোনও ‘অনিবার্য সাংগঠনিক সীমাবদ্ধতা’-এর উল্লেখ নেই। বস্তুত, ১৮ মাস মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই এই বদলির আদেশটি সম্পূর্ণ অস্পষ্ট।”

কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয় যে, যদি কোনও অফিসারের কর্মক্ষমতা অসন্তোষজনক হয়, তবে তাঁকে SCP-তে থাকা সত্ত্বেও বদলি করা যেতে পারে। তবে হাই কোর্ট জানায়, পিটিশনার যেহেতু তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণের নির্দিষ্ট অভিযোগ করেছেন, তাই এই যোগাযোগগুলির ভিত্তিতে বদলি কতটা বৈধ, তা নিশ্চিত নয়।

আদালত আরও উল্লেখ করে যে, অসন্তোষজনক পারফরম্যান্সের কারণেও বদলি কেবল “ইউনিট/ফর্মেশন দ্বারা গৃহীত মামলার ভিত্তিতে” সম্ভব। হাই কোর্ট জানায়, “যদি এসিআর (ACR)-এর ভিত্তিতে পারফরম্যান্সকে অসন্তোষজনক ধরা হয়, তবে ‘ইউনিট/ফর্মেশন দ্বারা গৃহীত মামলার ভিত্তিতে’ কথাটি অপ্রয়োজনীয় হয়ে যাবে। তাই আমরা আপাতত এই ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে পারছি না। বরং, আমাদের মতে, সরকারের উচিত ছিল সৌজন্য দেখিয়ে পিটিশনারকে বাতিন্ণ্ডায় তাঁর ১৮ মাসের মেয়াদ বা তার বেশি সময় পূর্ণ করার সুযোগ দেওয়া।”

হাই কোর্ট পর্যবেক্ষণে এটাও তুলে ধরে যে, শুনানির সময় জমা দেওয়া তথ্য থেকে মনে হচ্ছে, বদলি করার মূল কারণ হলো লেফট্যান্যান্ট কর্নেল এবং তাঁর কমান্ডিং অফিসারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, অন্য কিছু নয়। আদালত আরও বলেছে, সরকার পক্ষ যদি মনে করে যে এই বদলি সৎ উদ্দেশ্যে (bona fide) এবং প্রযোজ্য নির্দেশাবলী অনুসারে হয়েছে, তবে তারা সে সংক্রান্ত তথ্য আদালতে পেশ করতে পারে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy