হরিয়ানায় পুলিশে পরপর আত্মহত্যার ঘটনা, রাহুল গান্ধীর সফরের মধ্যেই ফের এএসআই সন্দীপের মৃত্যু!

হরিয়ানা পুলিশের আইপিএস অফিসার পূরণ কুমারের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে যখন রাজ্য পুলিশে তোলপাড় চলছে, ঠিক তখনই ঘটল আরও এক আত্মহননের ঘটনা। রোহতকে নিজের বাড়িতে গুলি করে আত্মহত্যা করলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর (ASI) সন্দীপ কুমার। এই ঘটনা হরিয়ানা পুলিশ মহলে নতুন করে বিতর্কের ঝড় তুলেছে।

মৃত্যুর আগে সন্দীপ কুমার একটি সাড়ে তিন পাতার সুদীর্ঘ নোট লেখার পাশাপাশি, প্রায় ৬ মিনিটের একটি ভিডিও রেকর্ড করেছেন বলে জানা গেছে। যদিও ইটিভি ভারত এই ভিডিও এবং নোটের সত্যতা যাচাই করেনি, তবে পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

এসপি-র বক্তব্য ও ফরেন্সিক তদন্ত
ঘটনার কথা স্বীকার করে রোহতকের এসপি এসএস ভোরিয়া জানিয়েছেন, সন্দীপ কুমার ছিলেন একজন অত্যন্ত দক্ষ আধিকারিক, যিনি কাজের সঙ্গে কখনও আপস করতেন না। তবে, মৃতের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া নোটটি সন্দীপেরই লেখা কি না, কিংবা ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি তিনিই রেকর্ড করেছিলেন কি না— এই সংক্রান্ত প্রশ্নের সরাসরি জবাব এড়িয়ে যান এসপি। তিনি বলেন, “এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন।”

IPS অফিসারের মৃত্যু বিতর্ক: যে ঘটনায় উত্তপ্ত রাজ্য
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই হরিয়ানা পুলিশের আইপিএস আধিকারিক পূরণ কুমারের মৃত্যু ঘিরে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তাঁর লেখা সুইসাইড নোটে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তাঁকে জাতপাত সংক্রান্ত বিষয়ে তুলে অপমান করা হয়েছে। এই ঘটনায় হরিয়ানা পুলিশের ডিজি শত্রুজিৎ সিং কাপুর, রোহতকের প্রাক্তন এসপি নরেন্দ্র বিজারনিয়ার-সহ একাধিক প্রবীণ আধিকারিক যুক্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রতিদিনের এই হেনস্তা সহ্য করতে না পেরেই তিনি নিজেকে শেষ করে দিয়েছেন বলে নোটে দাবি করা হয়।

স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই পূরণ কুমারের আইএএস স্ত্রী অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার দাবিতে সরব হন এবং হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি লেখেন। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নড়েচড়ে বসে পুলিশ। বিতর্কের জেরে রাজ্য পুলিশের ডিজি শত্রুজিৎ সিং কাপুরকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটিতে পাঠানো হয় এবং তাঁর জায়গায় 1992 ব্যাচের আইপিএস ওম প্রকাশ সিংকে ডিজিপি’র দায়িত্ব দেওয়া হয়।

আইপিএস পূরণ কুমারের এই ঘটনায় যখন রাজ্য পুলিশ প্রশাসন কোণঠাসা, ঠিক তখনই এএসআই সন্দীপ কুমারের আত্মহনন প্রশ্ন তুলে দিল। মঙ্গলবার মৃত পুলিশ আধিকারিকের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সব মিলিয়ে, হরিয়ানা পুলিশে পরপর আত্মহত্যার ঘটনা এবং প্রশাসনিক কর্তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জেরে বিতর্ক আরও বড় আকার নিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy