আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বাড়ির কর একলাফে তিন থেকে পাঁচগুণ বেড়ে যাওয়ায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা থানার হাটকালনা পঞ্চায়েত এলাকায়। এই অস্বাভাবিক কর বৃদ্ধির ঘটনায় পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতৃত্বও অস্বস্তিতে পড়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হঠাৎ করেই তাদের বাড়ির করের পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ানো হয়েছে, যা তাদের সীমিত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু মণ্ডল বলেন, “আগে বাড়ির কর দিতাম ৭৫ টাকা, এখন নতুন হারে তা বেড়ে ৪০০ টাকার বেশি হয়েছে। কীসের ভিত্তিতে এই কর বাড়ানো হয়েছে তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়।”
হাটকালনা পঞ্চায়েতের বহু বাসিন্দার দাবি, এলাকার বেশিরভাগ মানুষ চাষাবাদ, খেতমজুরি এবং তাঁত বোনার কাজের সঙ্গে যুক্ত। তাদের পক্ষে এই বিপুল পরিমাণ কর দেওয়া অসম্ভব। তাদের অভিযোগ, সাধারণত আলোচনার মাধ্যমে করের পরিমাণ বাড়ানো হয়, কিন্তু এবার কোনো রকম আলোচনা ছাড়াই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার জেরে কৃষ্ণদেবপুর, ধাত্রীগ্রাম এবং বাঘনাপাড়ার মতো গ্রামগুলিতেও বাড়ির কর ১০ থেকে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এই বিষয়ে হাটকালনা পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রাবন্তী মণ্ডল কর্মীদের ‘ভুল’কে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “অনলাইন পোর্টালে তথ্য আপডেট করার সময় কর্মীদের ভুলে এই সমস্যা হয়েছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। খুব শিগগিরই এর সমাধান হবে।”
পঞ্চায়েতের এই অস্বাভাবিক কর বৃদ্ধির পর থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আপাতত কর নেওয়া বন্ধ রাখার জন্য একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে পঞ্চায়েত। তবে বিরোধীরা এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ এবং অনিয়মের অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ঘটনা তৃণমূলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করবে। এখন দেখার, পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করে এবং সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রশমন করতে পারে।