হঠাৎ ঢাকা সেনানিবাসে তৈরি হলো অস্থায়ী জেলখানা! নেপথ্যে ১৫ সেনাকর্তার হেফাজত— কী কারণে জরুরি এমন পদক্ষেপ?

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার হিসাবে ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। হঠাৎ করে দেশের প্রতিরক্ষা মূল কেন্দ্রে এমন একটি অস্থায়ী জেলখানা তৈরির ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শেখ হাসিনার আমলে ‘গুম করে নির্যাতন’ এবং সাম্প্রতিক জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এ অভিযুক্ত ১৫ জন কর্মরত সেনাকর্তাকে হেফাজতে রাখার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রবিবার (তারিখ উল্লেখ নেই) বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, “ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোড সংলগ্ন এমইএস বিল্ডিং-কে সাময়িকভাবে জেলখানা হিসাবে রূপান্তর করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন মতোই এই আদেশ জারি করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কার্যকরও করা হয়েছে।” তবে এই অস্থায়ী কারাগারে কাদের বন্দি হিসাবে রাখা হবে, সেই সংক্রান্ত কোনো তথ্য এখনও সরকার প্রকাশ করেনি।

হেফাজতে ১৫ জন কর্মরত সেনাকর্তা
গত বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশের ২৫ জন কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে। এদের মধ্যে ১৫ জন এখনও সেনাবাহিনীতে কর্মরত এবং একজন অবসর নেওয়ার আগে ছুটিতে রয়েছেন।

সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পূর্বতন শেখ হাসিনার সরকারের সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ছাড়া বাকি সকলকেই ইতোমধ্যে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সেনার অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল মেজর হাকিমুজ্জামান সাংবাদিক বৈঠকে নিশ্চিত করেছেন যে কবীর ‘আত্মগোপন’ করেছেন এবং তাঁর হদিশ পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম অনুযায়ী, এই সেনাকর্তাদের বিরুদ্ধে মূলত দুটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে:

১. শেখ হাসিনার আমলে ‘গুম করে নির্যাতন’।
২. জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’-এ জড়িত থাকা।

এই গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্তদের ‘গ্রেফতার না করে’ কেবল হেফাজতে নেওয়ায় বাংলাদেশের সেনার বিরুদ্ধে একটি অংশের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে তাঁদের ‘দৌরাত্ম্য’ নিয়ে বহু অভিযোগ ওঠায়, এই ঘটনা বাংলাদেশের সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামানের ওপরও চাপ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy