দেশের মহিলাদের, বিশেষ করে হিন্দু মহিলাদের, অবিলম্বে উইল (Will) তৈরি করে রাখার জন্য আবেদন জানাল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার একটি জনস্বার্থ মামলার (PIL) শুনানি চলাকালীন দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেয়। আদালতের মতে, কোনও মহিলার যদি স্বামী বা সন্তান না থাকে এবং তিনি যদি উইল না করেই মারা যান, তবে তাঁর স্ব-অর্জিত সম্পত্তি নিয়ে ভবিষ্যতে বাবা-মায়ের পরিবার এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার সৃষ্টি হতে পারে। সেই জটিলতা এড়াতেই এই পদক্ষেপ প্রয়োজন।
বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং আর মহাদেবেনের বেঞ্চ ১৯৫৬ সালের হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের ১৫ (১) (বি) ধারার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে। এই ধারা অনুযায়ী, উইল না করে কোনও হিন্দু মহিলার মৃত্যু হলে তাঁর স্ব-অর্জিত সম্পত্তির ওপর প্রথমে স্বামীর উত্তরাধিকারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়, নিজের মা-বাবার নয়। এই আইনকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আইনজীবী স্নিগ্ধা মেহরা আদালতে PIL দায়ের করেন। তিনি ধারাটিকে ‘স্বৈরাচারী’ বলে অভিহিত করেন।
আদালত স্বীকার করে, ১৯৫৬ সালে হয়তো সংসদ হিন্দু মহিলাদের ব্যক্তিগতভাবে সম্পত্তি অর্জনের সম্ভাবনা বুঝতে পারেনি। কিন্তু গত কয়েক দশকে শিক্ষা, চাকরি ও ব্যবসায় মহিলাদের ব্যাপক উন্নতি এবং নিজস্ব সম্পত্তি গড়ে তোলার বিষয়টিকে উপেক্ষা করা যায় না।
যদিও আদালত সরাসরি কোনও রায় দেয়নি, তবে উইল করার মাধ্যমে ভবিষ্যতের আইনি জটিলতা এড়ানোর ওপর জোর দিয়েছে। আদালত এও বলেছে, এমন পরিস্থিতিতে দুই পক্ষকে (বাবার বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ি) প্রথমে নিজেদের মধ্যে মধ্যস্থতার মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টা করতে হবে। তবে আদালত এই বিষয়ে সতর্ক থাকতে চায়, কারণ হাজার হাজার বছরের পুরনো হিন্দুদের সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে নারীর অধিকারের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।