আসন্ন স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দেশের রাজধানী দিল্লিতে বড় ধরনের নিরাপত্তা ব্যর্থতার ঘটনা সামনে এসেছে। লালকেল্লায় অনুষ্ঠিত একটি মক ড্রিল চলাকালীন নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সাতজন পুলিশ কর্মকর্তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। একইসঙ্গে, ওই সময়ে লালকেল্লায় প্রবেশের চেষ্টা করার অভিযোগে পাঁচজন বাংলাদেশী নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেল শনিবার স্বাধীনতা দিবসের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই নিয়মিত মক ড্রিলটি আয়োজন করেছিল। এই ড্রিলের উদ্দেশ্য ছিল নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা। কিন্তু মক ড্রিল চলাকালীন একটি ডামি বোমা খুঁজে বের করতে পুলিশ কর্মকর্তারা ব্যর্থ হন। বিশেষ দলের সদস্যরা কোনো বাধা ছাড়াই ডামি বিস্ফোরক নিয়ে লালকেল্লার ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়, যা একাধিক স্তরের নিরাপত্তা ত্রুটি স্পষ্ট করে তোলে। এর জেরেই কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডিসিপি রাজা বান্থিয়া অবিলম্বে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা এবং উন্নত করার নির্দেশ দিয়েছেন। একইসাথে, বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করা হয়েছে।
এদিকে, এই মক ড্রিল চলাকালীনই পাঁচজন বাংলাদেশী নাগরিককে লালকেল্লায় প্রবেশের চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিসিপি রাজা বান্থিয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেফতারকৃতদের বয়স ২০ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে এবং তাদের কাছে প্রবেশের কোনো বৈধ অনুমতিপত্র ছিল না। তাদের কাছে কোনো ভিসা বা বৈধ কাগজপত্র পাওয়া যায়নি, যদিও তাদের বাংলাদেশী নাগরিকত্বের প্রমাণ রয়েছে এমন কিছু নথি উদ্ধার করা হয়েছে। এই ব্যক্তিরা তিন-চার মাস আগে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। কেন্দ্রীয় সংস্থা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে এবং পরবর্তীতে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার আরেকটি ঘটনায় জাল আধার কার্ড নিয়ে লালকেল্লায় প্রবেশের চেষ্টা করার সময় আরও পাঁচজন বাংলাদেশী নাগরিককে আটক করা হয়। তাদেরও হেফাজতে নিয়ে আটক কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লালকেল্লা থেকে ভাষণ দেন, যে কারণে এটি সর্বদা সন্ত্রাসবাদী হামলার জন্য একটি সংবেদনশীল স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ঘটনার পর, ১৫ই আগস্টের আগে লালকেল্লার নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করা হয়েছে। কর্মকর্তারা নিরন্তর নজরদারি করছেন এবং প্রতিটি সন্দেহজনক গতিবিধির ওপর কঠোর পর্যবেক্ষণ রাখা হচ্ছে।