আগেই আভাস ছিল, আর সেটাই মিলে গেল! ঝাড়খণ্ডের দিকে সরে গিয়েছে সেই নিম্নচাপ, ধীরে ধীরে পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিক বরাবর উত্তর ছত্তিসগঢ়ের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু তার মানেই এই নয় যে, বৃষ্টির হাত থেকে এখনই মুক্তি মিলছে। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ‘স্ট্রং মনসুন ফ্লো’ বা শক্তিশালী মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী কয়েকদিন রাজ্যজুড়ে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত জারি থাকবে। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৌসুমী অক্ষরেখা বেশ সক্রিয় থাকায় এই পরিস্থিতি।
কলকাতার আষাঢ়ে মেজাজ: মেঘলা আকাশ, অস্বস্তিকর আর্দ্রতা
সকাল থেকে কলকাতায় বৃষ্টি না থাকলেও, আকাশ মেঘলা। তবে, শহরের আবহাওয়ায় জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ঘোরাফেরা করছে ৮৯ থেকে ৯৮ শতাংশের মধ্যে। এর ফলে অস্বস্তিকর আর্দ্রতাজনিত গরমের হাত থেকে আপাতত রেহাই মিলছে না শহরবাসীর। এদিন সকালে শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৬.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১৭.২ মিলিমিটার।
দক্ষিণবঙ্গের চিত্র: বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা, সোমবার থেকে ফের বাড়বে
দক্ষিণবঙ্গে আজ ভারী বৃষ্টির তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই। পূর্ব-পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার এই বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ও ব্যাপকতা কিছুটা কমবে বলে জানানো হয়েছে। তবে, রবিবার থেকে আবারও বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির পরিমাণ সামান্য বাড়তে পারে।
আসল খেলাটা শুরু হবে সোমবার থেকে। এদিন থেকে ফের ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকছে, বিশেষত পুরুলিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি রয়েছে।
উত্তরবঙ্গের অবস্থাও একই: দার্জিলিং, কালিম্পংয়ে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রেও চিত্রটা প্রায় একই। আজ বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও তার পরিমাণ ও ব্যাপকতা কম থাকবে। মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কিছু অংশে তুলনামূলক বেশি বৃষ্টি হতে পারে। শনিবারও একই অবস্থা বজায় থাকবে। তবে রবিবার থেকে ফের ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে। সোমবার ও মঙ্গলবারেও জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর ও আলিপুরদুয়ারের জন্য ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি রয়েছে।
অর্থাৎ, নিম্নচাপ সরে গেলেও বর্ষার ‘খেল’ এখনও জারি রয়েছে। আপাতত ছাতা আর রেইনকোট সঙ্গী করে চলতে হবে বঙ্গবাসীকে, কারণ মেঘ-বৃষ্টি আর আর্দ্রতার লুকোচুরি খেলা চলবেই।