স্কুলে ‘ইলিশ উৎসব’! মিড ডে মিলে খিচুড়ির সঙ্গে পড়ল ইলিশ ভাজা, চেটেপুটে খেল কচিকাঁচারা

বর্ষার মরসুমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খুদে পড়ুয়াদের মুখে হাসি ফোটাল ‘ইলিশ উৎসব’। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার উলুবাড়ি বেড়মাল অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিলে খিচুড়ির সঙ্গে ইলিশ ভাজা, বেগুন ভাজা এবং মিষ্টি খাওয়ানো হয়েছে। এই অভিনব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

উলুবাড়ি বেড়মাল অবৈতনিক স্কুলে প্রায় ১০০ জন ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করে। এদের বেশিরভাগই প্রান্তিক পরিবারের সন্তান। মিড ডে মিলে সাধারণত খিচুড়ি বা ডিম-ভাত, সয়াবিনের তরকারি দেওয়া হয়। বছরের পর বছর একই ধরনের খাবার খেয়ে কচিকাঁচাদের মুখে স্বাদ বদলের সুযোগ প্রায় থাকে না বললেই চলে। এই একঘেয়েমি কাটাতে এবং ইলিশের স্বাদের সঙ্গে পরিচিত করতে স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিশেষ উদ্যোগ নেয়।

প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক হালদার জানান, গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ শিকারিরা রায়দিঘি ঘাটে ইলিশ নিয়ে এলেও, তার অধিকাংশই বাইরে রপ্তানি হয়ে যায়। ফলে, এলাকার প্রান্তিক পরিবারগুলির পক্ষে চড়া দামে ইলিশ কিনে খাওয়া সম্ভব হয় না। তাই তিনি স্থির করেন, একদিন হলেও স্কুলের পড়ুয়াদের ইলিশ খাওয়াবেন। তিনি বলেন, “খাওয়াবোই যখন ঠিক করেছিলাম, তখন বড় ইলিশই খাওয়াব। বাজার থেকে প্রায় ৬০০-৭০০ গ্রামের ইলিশ কিনে এনেছি কেজি প্রতি ৮৫০-৯০০ টাকায়।”

ইলিশের মতো সুস্বাদু খাবার পেয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ছিল মহা খুশি। অনুশ্রী বৈদ্য নামে এক ছাত্রী উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছে যে সে খুব মজা করে খেয়েছে। অভিভাবক বিভা হালদার এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেছেন, “মনে হচ্ছে স্কুলে যেন ইলিশ উৎসব চলছে! আশেপাশের কোনও স্কুলে এমন অভিনব উদ্যোগ আগে দেখিনি। স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং প্রধান শিক্ষককে ধন্যবাদ।”

প্রধান শিক্ষক শশাঙ্ক হালদার আরও জানিয়েছেন যে এটিই প্রথম এবং শেষ নয়। আগামী দিনেও সুযোগ পেলে তিনি খুদেদের পাতে বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু খাবার তুলে দেবেন। তাঁর এই মানবিক উদ্যোগ এলাকার মানুষের কাছে প্রশংসিত হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy