সীমান্তে নতুন ছায়া, ISI-এর মদতে বাংলাদেশে সক্রিয় ‘ডেভিলস ব্রেথ’ চক্র, বিষ ছড়াচ্ছে ভারতে!

দক্ষিণ এশিয়ার সীমান্তে এক নতুন এবং গুরুতর নিরাপত্তা হুমকি তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত অপরাধী গ্রুপগুলো বাংলাদেশকে ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ব্যবহার করে ভারতের পূর্বাঞ্চলে মাদক, ভুয়া মুদ্রা এবং মারাত্মক রাসায়নিক পদার্থ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ (স্কোপোলামিন) ছড়াচ্ছে।

বিপজ্জনক ‘পাইপলাইন’ ও ড্রাগ চক্র

 

গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে, মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে প্রবেশের বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা যাচাইয়ের শর্ত শিথিল করায় এই বিপজ্জনক ‘পাইপলাইন’ খুলে যায়।

  • ‘ডেভিলস ব্রেথ’: এটি বৈজ্ঞানিকভাবে স্কোপোলামিন নামে পরিচিত। কলম্বিয়ার ‘বোরাচেরো’ গাছ থেকে তৈরি এই রাসায়নিক শ্বাসের মাধ্যমে বা পানীয় মিশিয়ে দেওয়া হলে ভুক্তভোগী ‘জম্বি’র মতো স্মৃতি হারায়, আনুগত্য করে এবং কোনো প্রতিরোধ করতে পারে না।

  • গ্রেফতার: সম্প্রতি বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ চক্রের সঙ্গে যুক্ত দুজন পাকিস্তানি নাগরিককে গ্রেফতার করেছে। তাদের কাছ থেকে ড্রাগের নমুনা ও পাকিস্তানি পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে।

  • নেটওয়ার্ক: এই সিন্ডিকেট পাকিস্তান থেকে ঢাকায় ঢুকে জিনেভা ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। মোহাম্মদপুর, মিরপুর, রংপুর, সৈয়দপুরসহ অন্যান্য জেলার ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে বসবাসকারী চার লক্ষেরও বেশি ‘স্ট্র্যান্ডেড পাকিস্তানি’ সম্প্রদায়ের সঙ্গে তারা হাত মিলিয়ে কাজ করছে।

ISI-এর হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার কৌশল

 

এই নেটওয়ার্কগুলো এখন আর বিচ্ছিন্ন অপরাধ নয়, বরং আইএসআই-সমর্থিত সমন্বিত সীমান্ত-পারের অপরাধী কাঠামো:

  • দুর্বল গোষ্ঠীর শোষণ: পাকিস্তানি অপরাধীরা ক্যাম্পের মহিলা, শিশু ও যুবকদের শোষণ করছে। তাদের কুরিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক বিতরণ, ভুয়া নোট চালানো এবং ‘ডেভিলস ব্রেথ’ দেওয়ার জন্য।

  • ভারতে অনুপ্রবেশ: এই গ্রুপগুলো ৪-৫ জন ক্যাম্প বাসিন্দাকে নিয়ে একজন পাকিস্তানি নেতৃত্বে উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য অঞ্চলে অপারেশন চালাচ্ছে।

  • মাদক-সন্ত্রাস: গত অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে পাকিস্তানি কার্গোতে লুকিয়ে রাখা ২৫ টন পপি সীড (মাদকের কাঁচামাল) জব্দ হওয়ার ঘটনায় আইএসআই-এর ক্লাসিক ট্রেডক্রাফট স্পষ্ট। দাউদ ইব্রাহিমের ডি-কোম্পানির মতো নার্কো-লর্ডরা অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং ভুয়া নোটের তস্করি চালাচ্ছে।

বাংলাদেশের বন্দরগুলো, বিশেষ করে চট্টগ্রাম এবং মংলা, এখন এই নার্কো-টেরর অপারেশনের ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতকে অস্থিতিশীল করতে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা পাকিস্তানের ‘হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার’ কৌশলের অংশ।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy