তৃণমূল কংগ্রেসে বড় ধরনের সাংগঠনিক পরিবর্তনের পরপরই লোকসভার চিফ হুইপ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভার দলনেতা হিসেবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগের ঘোষণা করার পরেই এই ঘটনা ঘটে।
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তার ইস্তফার কারণ হিসেবে জানান, নেত্রী মমতা তার ওপর আস্থা রাখতে পারেননি। তবে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সহকর্মী সাংসদ মহুয়া মৈত্রর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সংঘাতও এই সিদ্ধান্তের একটি কারণ হতে পারে। ইস্তফার ঠিক আগে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মহুয়াকে উদ্দেশ্য করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন।
এই ঘটনার পর মঙ্গলবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে প্রতিক্রিয়া দেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু বলেন, “কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষিত মানুষ। ২০১১ সালের আগে সিপিএমের সঙ্গে যে সংঘর্ষ ছিল, তাতে কল্যাণের সক্রিয় ভূমিকা ছিল।” শুভেন্দুর মুখে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রশংসা রাজনৈতিক মহলে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে।
এদিকে, দলীয় সূত্র থেকে জানা গেছে, ইস্তফার পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কল্যাণকে ফোন করে আগামী ৭ আগস্ট পর্যন্ত চিফ হুইপের দায়িত্ব সামলানোর অনুরোধ জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি কল্যাণকে অতিরিক্ত মান-অভিমান না করার পরামর্শও দিয়েছেন। জানা গেছে, অভিষেক আগামী ৭ আগস্ট দিল্লিতে গিয়ে কল্যাণের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলোচনা করবেন।
তবে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায় অভিমানের সুর স্পষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, তিনি লোকসভার সহকারী নেতা কাকলি ঘোষ দস্তিদারের কাছে অনুরোধ করেছেন যেন তার জন্য পেছনের দিকে একটি আসন নির্দিষ্ট করা হয়। সখেদে তিনি বলেন, “আমার দরকার ফুরিয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এবার দিদিই দল চালান।” এই মন্তব্যগুলি থেকে বোঝা যাচ্ছে, তৃণমূলের অভ্যন্তরে একটি বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।