স্কুল চত্বরে একাধিক বিষাক্ত সাপের উপদ্রব, বিশেষ করে গোখরোর বাচ্চার আনাগোনায় আতঙ্কে বন্ধ হয়ে গেল বনগাঁর কালীচরণ হাওলাদার বালিকা বিদ্যাপীঠ। ভয়ে ছাত্রীরা স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে শ্রেণিকক্ষগুলি এখন ছাত্রীশূন্য। এমনকি শিক্ষক-শিক্ষিকারাও চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই ঘটনায় অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন, এবং দ্রুত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের দাবি উঠেছে।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই বিদ্যালয়ের মেঝে, শ্রেণিকক্ষের কোণায়, শৌচাগারে, এমনকি বেঞ্চের তলায়ও সাপের বাচ্চা দেখা যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এক ছাত্রীর পায়েও নাকি একবার সাপ জড়িয়ে গিয়েছিল, যদিও সৌভাগ্যবশত কোনো বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটেনি।
অভিভাবকদের চরম উদ্বেগ, স্কুলে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত
সাপের আতঙ্কে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের মধ্যে নিজেদের মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। অনেকেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যতদিন না পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসছে এবং বিদ্যালয় নিরাপদ হচ্ছে, ততদিন তাঁরা তাঁদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাবেন না।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ায় বন দফতর, স্কুল শিক্ষা দফতর এবং স্থানীয় ব্লক অফিসে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
প্রধান শিক্ষিকার আকুতি: দ্রুত সমাধান চায় স্কুল
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে প্রায় ১৫০ জন ছাত্রী রয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিজের উদ্বেগের কথা জানিয়ে বলেন, “আমরা আতঙ্কে রয়েছি। ছাত্রীরা নানা সময় সাপ দেখতে পাওয়ার ঘটনা জানাচ্ছে। ফলে কার্যত ভয়ে এখন স্কুল বন্ধ হয়ে পড়েছে।” তিনি আরও জানান, সামনেই পরীক্ষা রয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
বনগাঁর এই বালিকা বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে এবং ছাত্রীরা নির্ভয়ে আবার স্কুলে আসতে পারবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। এই ধরনের ঘটনা গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলছে।