সরকারি বাবুকে প্রস্রাব পান করানোর অভিযোগে গ্রেফতার পিওন, ঘটনায় শোরগোল

ওড়িশার গজপতি জেলায় এক নজিরবিহীন এবং অত্যন্ত ঘৃণ্য ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে গেছে। গ্রামীণ জল সরবরাহ ও স্যানিটেশন বিভাগে (RWSS) কর্মরত এক অধঃস্তন কর্মী তার ঊর্ধ্বতন আধিকারিককে জলের বদলে প্রস্রাব পান করিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযুক্ত সুভাষ চন্দ্র বেহেরাকে গ্রেফতার করেছে। গত ২৩শে জুলাই রাতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে।

অন্ধকারে ঘটে যাওয়া জঘন্য কাণ্ড
ঘটনার সূত্রপাত হয় ২৩শে জুলাই রাতে, যখন আর. উদয়গিরির আরডব্লিউএসএস অফিসে সহকারী অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার গুরু প্রসাদ পট্টনায়ক এবং অধঃস্তন কর্মী সুভাষ চন্দ্র বেহেরা গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করছিলেন। কাজের ফাঁকে গুরু প্রসাদ পট্টনায়ক সুভাষ চন্দ্র বেহেরার কাছে জল চান। অভিযোগ অনুযায়ী, বেহেরা তাকে যে বোতলটি দেন, তাতে জলের পরিবর্তে প্রস্রাব ছিল। অফিসের ভেতরের পর্যাপ্ত আলোর অভাব এবং কাজের চাপের কারণে, গুরু প্রসাদ বোতলের ভেতরের তরল না দেখেই পান করে ফেলেন।

অসুস্থতা ও রহস্য উন্মোচন
কিছুক্ষণের মধ্যেই গুরু প্রসাদ পট্টনায়কের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করে। বোতল থেকে আসা অস্বাভাবিক গন্ধের কারণে তার সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে তদন্ত করে জানা যায়, বোতলটিতে জল নয়, ছিল প্রস্রাব। ঊর্ধ্বতন আধিকারিকের অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বেরহামপুরের এমকেসিজি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

পুলিশের তৎপরতা ও তদন্ত শুরু
চিকিৎসার পর গুরু প্রসাদ পট্টনায়কের অবস্থার উন্নতি হলে তিনি আর. উদয়গিরি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ তৎপর হয় এবং অভিযুক্ত পিওন সুভাষ চন্দ্র বেহেরাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বর্তমানে পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে এই লজ্জাজনক ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা, নাকি এর পেছনে কোনো মানসিক ভারসাম্যহীনতা অথবা পূর্ব শত্রুতা ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর. উদয়গিরি থানার ইনচার্জ জানিয়েছেন যে, ঘটনার সমস্ত দিক পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এই ঘটনা সরকারি দপ্তরে ঊর্ধ্বতন ও অধঃস্তন কর্মীদের সম্পর্ক এবং কাজের পরিবেশ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy