আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নিহত তরুণী চিকিৎসক অভয়ার বাবার পক্ষ থেকে এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। তার দাবি, নবান্ন অভিযানে পুলিশের লাঠিচার্জে আহত তার স্ত্রীকে সরকারি চাপের কারণে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি নেয়নি। শনিবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে।
আরজি করের ঘটনার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে নিহত তরুণীর বাবা-মা শনিবার শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে একটি নবান্ন অভিযানে যোগ দিয়েছিলেন। এই মিছিলে বিজেপি নেতারা দলীয় পতাকা ছাড়াই অংশ নিয়েছিলেন। অভিযোগ ওঠে, এই মিছিলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এর ফলে নির্যাতিতার মা-এর কপালে আঘাত লাগে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায় এবং তার হাতের শাঁখা ভেঙে যায়। তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় শনিবার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা জানান যে, তার মাথায় চোট রয়েছে এবং তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা প্রয়োজন। কিন্তু রবিবার সকালে তার বাবা অভিযোগ করেন, “হাসপাতালের ডাক্তাররা স্বীকার করেছেন যে প্রশাসনের চাপে তারা আমার স্ত্রীকে ভর্তি নিতে পারছে না।” তিনি আরও বলেন, “কাল এখানে নিয়ে আসার পরই সিটি স্ক্যান করা হয়েছিল। মাথায় আঘাতের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক চালু করা হয় এবং স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ তাকে দু’দিন পর্যবেক্ষণে রাখার পরামর্শ দেন। কিন্তু রাত সাড়ে দশটায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তাকে ভর্তির দরকার নেই।”
নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন যে, “রাতের বেলায় ওনাকে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। এটা স্পষ্ট যে সরকারি চাপের কারণেই তারা ভর্তি নিতে পারল না।” তিনি আরও জানান, হাসপাতালের সামনে সারাক্ষণ একটি পুলিশের গাড়িও দাঁড়িয়ে ছিল।
এদিকে, রবিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে নির্যাতিতার মা-কে বাড়ি নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গেছে। তার বাবা জানিয়েছেন, তিনি এখন বিপন্মুক্ত। মাথার ফোলা কমাতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়েছে এবং পিঠে ও হাতে কিছু আঁচড়ের দাগ রয়েছে। আপাতত তার অবস্থা স্থিতিশীল থাকায় তাকে বাড়িতেই নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বিজেপির পক্ষ থেকে তাকে কল্যাণী এইমসে স্থানান্তরের প্রস্তাব দেওয়া হলেও, তার বাবা জানান যে বর্তমানে তার প্রয়োজন নেই।
অন্যদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা হাসপাতালে নিহত তরুণীর মাকে দেখতে গিয়ে বলেন, “আরজি করের নির্যাতিতার মায়ের উপর হামলা অনভিপ্রেত। কীভাবে এই ঘটনা ঘটল তা জানতে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”