চারদিনের উৎকণ্ঠা আর আশঙ্কার অবসান হলো চরম ট্র্যাজেডিতে। উত্তাল সমুদ্র কেড়ে নিল ৩০ বছরের যুবক তাপস বরের প্রাণ। গত শুক্রবার শঙ্করপুর মৎস্যবন্দর থেকে মাছ ধরতে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়ার পর, মঙ্গলবার রাতে গভীর সমুদ্র থেকে তাঁর নিথর দেহ উদ্ধার হয়েছে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জুনপুট কোস্টাল থানার অন্তর্গত বগুড়ান এলাকায় শোকের আবহ তৈরি হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার দুপুরে শঙ্করপুর বন্দর থেকে ‘ফুলমণি’ নামক একটি ট্রলারে চড়ে অন্য মৎস্যজীবীদের সঙ্গে গভীর সমুদ্রে রওনা দিয়েছিলেন তাপস। বন্দর থেকে প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল দূরে একটি যান্ত্রিক বিভ্রাটের কারণে ঘটে যায় অঘটন। ট্রলারের মাছ ধরার জাল কোনওভাবে প্রপেলারে জড়িয়ে যাওয়ায় ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। মাঝসমুদ্রে সচল করতে প্রপেলারের জাল কাটতে জলে নামেন তিনজন মৎস্যজীবী, যাদের মধ্যে ছিলেন তাপসও। জাল কাটা শেষ হলেও, আচমকা এক বিশাল ঢেউ আর প্রবল স্রোতের টানে তলিয়ে যান তিনি। বাকি দু’জন কোনওমতে ট্রলারে উঠতে সক্ষম হলেও তাপস আর ফেরেননি।
ঘটনার পরই ট্রলার মালিক মন্দারমণি কোস্টাল থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পুলিশের স্পিডবোট নিয়ে শুরু হয় তল্লাশি। কিন্তু টানা কয়েকদিন খোঁজাখুঁজির পরেও তাঁর হদিশ মেলেনি। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে অন্য এক মৎস্যজীবী সমুদ্রে একটি দেহ ভাসতে দেখেন। খবর দেওয়া হয় পুলিশ ও ট্রলার মালিককে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে আনলে পরিবারের সদস্যরা সেটিকে তাপস বরের দেহ বলে শনাক্ত করেন।
মৃত মৎস্যজীবীর দিদি পূর্ণিমা বর কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, “ভাই মাছ ধরতে গিয়েছিল, কিন্তু আর ফিরে এলো না। আজ ওর প্রাণহীন দেহটা উদ্ধার হলো।” রাতেই দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। রোজগেরে ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি এখন দিশেহারা।