সময়মতো আয়কর রিটার্ন (ITR) জমা দেওয়ার পরও অনেক করদাতা রিফান্ড পেতে দেরির সম্মুখীন হন। সাধারণত রিফান্ড কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জমা হলেও, কিছু ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি দীর্ঘায়িত হতে পারে। আয়কর বিশেষজ্ঞরা এই দেরির পেছনে বেশ কিছু প্রধান কারণ চিহ্নিত করেছেন এবং দ্রুত ফেরত পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন।
আয়কর ফেরত পেতে দেরির প্রধান কারণসমূহ:
১. ট্যাক্স ক্রেডিটের অসামঞ্জস্য: করদাতার ফর্ম ২৬এএস (Form 26AS) এবং জমা দেওয়া আইটিআর (ITR)-এর তথ্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকলে আয়কর দফতর অতিরিক্ত সময় নেয়।
২. ই-ভেরিফিকেশন না করা: ITR জমা দেওয়ার পর যদি তা ই-ভেরিফাই (e-Verify) না করা হয়, তবে রিফান্ড প্রক্রিয়া শুরুই হয় না।
৩. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সমস্যা: রিফান্ড পেতে হলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অবশ্যই প্রি-ভ্যালিডেটেড এবং প্যানের (PAN)-এর সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হবে। ভুল অ্যাকাউন্ট নম্বর, IFSC/MICR কোড বা নামের অমিল থাকলে রিফান্ড আটকে যায়।
৪. আয় বা টিডিএস-এ গরমিল: রিপোর্টেড ইনকাম (Reported Income) এবং টিডিএস (TDS)-এর মধ্যে বিভ্রাট থাকলে বাড়তি যাচাই করা হয়।
৫. বকেয়া কর সমন্বয় (ধারা ২৪৫): আয়কর আইনের ২৪৫ ধারা অনুযায়ী, পূর্ববর্তী করবর্ষে কোনো বকেয়া থাকলে রিফান্ডের টাকা সেই বকেয়া করের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়।
দ্রুত রিফান্ড পাওয়ার সঠিক উপায়:
আয়কর ফেরত দ্রুত নিশ্চিত করতে করদাতাদের নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করা উচিত:
ই-ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন: আধার ওটিপি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে যত দ্রুত সম্ভব ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করতে হবে।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট প্রি-ভ্যালিডেট করুন: অ্যাকাউন্টটি অবশ্যই প্যানের সঙ্গে যুক্ত এবং যাচাই করা থাকতে হবে। ই-ফাইলিং পোর্টালের “My Profile” সেকশন থেকে এটি যাচাই করা যায়।
নোটিশের দ্রুত জবাব দিন: আয়কর দফতর থেকে কোনো নোটিশ এলে ২১ দিনের মধ্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
স্ট্যাটাস নিয়মিত পরীক্ষা: ই-ফাইলিং পোর্টালের “Refund/Demand Status” সেকশনে নিয়মিত রিফান্ডের অগ্রগতি দেখা উচিত।
সময়সীমা ও সুদ:
সাধারণত ITR দাখিল এবং ই-ভেরিফাই করার পর ৪–৫ সপ্তাহের মধ্যে রিফান্ড জমা হয়। দেরির ক্ষেত্রে, আয়কর আইনের ২৪৪এ ধারায় অতিরিক্ত কর ফেরতের উপর মাসে ০.৫% হারে সুদ দেওয়া হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) জানিয়েছে, কোনো রিটার্ন যদি মূল্যায়ন বা পুনর্মূল্যায়নের প্রক্রিয়াধীন থাকে, তবে রিফান্ড আটকে রাখা হবে। NBR করদাতাদের ঘরে বসে সহজে রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য নতুন অনলাইন সফটওয়্যার চালু করেছে এবং ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিল না করার জন্য সতর্ক করেছে।