সরকারি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ‘সঞ্চার সাথী’-কে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া ‘নজরদারি’ বিতর্কে অবশেষে নীরবতা ভাঙল কেন্দ্র। মঙ্গলবার সংসদ অধিবেশন শুরুর আগে বিরোধীদের তীব্র কটাক্ষের মুখে দাঁড়িয়ে এই অ্যাপ নিয়ে তৈরি হওয়া সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
এর আগে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এই অ্যাপটিকে ‘ব্যক্তি পরিসরে হস্তক্ষেপকারী’ বলে কটাক্ষ করেন। অন্যদিকে, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক কেসি বেণুগোপাল এটিকে ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের হাতিয়ার’ বলে মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সাফাই ও দাবি:
মঙ্গলবার সংসদ চত্বরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া দাবি করেন, ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপটি যেকোনো মুহূর্তেই ডিলিট করা যেতে পারে এবং এটি রাখা বা না রাখা সম্পূর্ণভাবে ব্যবহারকারীর ঐচ্ছিক বিষয়ের মধ্যে পড়ে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, “আপনি চাইলে অ্যাপটি সক্রিয় রাখবেন, না চাইলে রাখবেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে মোবাইল ব্যবহারকারীর ইচ্ছার অংশ।” তিনি অ্যাপের উপযোগিতা তুলে ধরে বলেন, “বর্তমানে দেড় কোটির বেশি মানুষ এই অ্যাপে সক্রিয় রয়েছেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে ২০ লক্ষ হারিয়ে যাওয়া ফোন খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। দু’কোটির কাছাকাছি ফোনে হতে চলা প্রতারণা রুখে দেওয়া হয়েছে।” তিনি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেন, “না এখানে কোনো কল মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে, না কোনো নজরদারি ব্যবস্থা।”
নির্দেশিকায় অস্পষ্টতা নিয়ে জল্পনা:
যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই আশ্বাসের সঙ্গে সরকারি নির্দেশিকার একটি অস্পষ্টতা নিয়ে জল্পনা রয়েই গেছে। কারণ, টেলিকম মন্ত্রক মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে, এই অ্যাপটির কাজ সীমিত কিংবা নিষিদ্ধ করার কোনো অপশন রাখা যাবে না, কিন্তু ‘ডিলিট’-এর কোনো প্রসঙ্গ সেই নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। সংসদ চত্বরে মন্ত্রীর ‘ডিলিট করে দিন’ মন্তব্যের পরেও বিরোধীরা তাই এই অস্পষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
মঙ্গলবার এই ‘নজরদারির’ অভিযোগ তুলেই কংগ্রেসে সাংসদ রেণুকা চৌধরি রাজ্যসভায় মুলতুবি প্রস্তাব জমা দেন। সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী এটিকে ‘স্নুপিং অ্যাপ’ বলেও দাবি করেন।