বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ে হামলার ঘটনায় রাজ্য রাজনীতিতে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এই হামলার ঘটনায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ, কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক-সহ মোট ৪১ জনের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী অনীশ কুমার মুখোপাধ্যায় মঙ্গলবার রাতে কোচবিহারের পুলিশ সুপার, কোতোয়ালি ও ঘোকসাডাঙা থানায় ই-মেলের মাধ্যমে এই অভিযোগ জানান।
শুভেন্দু অধিকারীর কনভয়ের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করে বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মন বলেন, “বিরোধী দলনেতাকে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তার ভাষা নেই। আমরা এই ঘটনার ধিক্কার জানাই।”
তবে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। তিনি বলেন, “গতকাল শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন, আমি রোহিঙ্গাদের নিয়ে হামলা করেছি। কিন্তু অভিযোগের তালিকায় কোনো রোহিঙ্গার নাম দেখলাম না। তাহলে কি তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সেটিং করেছেন? তার মাথায় ছিট রয়েছে, তার চিকিৎসা দরকার।” উদয়ন গুহ আরও দাবি করেন, শুভেন্দু পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু তালিকায় তারও নাম নেই।
অন্যদিকে, এই হামলার ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে। বুধবার তাদের আদালতে পেশ করার সময় তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। সবমিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। গত কয়েক মাসে দিনহাটা, মাথাভাঙা ও শীতলকুচিতে বিজেপির তিন বিধায়ককে হেনস্তার অভিযোগ ওঠার পর এই হামলা নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
বিজেপির রাজ্য সম্পাদক অগ্নিমিত্রা পাল এই হামলাকে পূর্ব পরিকল্পিত এবং পুলিশি মদতপুষ্ট বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “শুভেন্দু কোন পথ দিয়ে যাবেন, তা পুলিশ জানত। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী ছিল না কেন? পুলিশের সামনেই তৃণমূল কর্মীরা বিরোধী দলনেতার গাড়ির ওপর ইট, বাঁশ নিয়ে আক্রমণ করে। আমরা কি ধরে নিতে পারি রাজ্য প্রশাসন এই হামলার সঙ্গে যুক্ত?” অগ্নিমিত্রা পাল আরও বলেন, এই হামলার জন্য মন্ত্রী উদয়ন গুহ দায়ী এবং তার অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান। একই সাথে তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।