শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায় একটি বাড়িতে দুই পক্ষের ভাড়াটেদের মধ্যে তীব্র বচসা ও হাতাহাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। মঙ্গলবার এই ঘটনায় লীলা দত্ত এবং রুবি দত্ত নামে দুই বোনকে গ্রেপ্তার করেছে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ। অভিযোগ উঠেছে, এই বিবাদের মূলে রয়েছে জাতিগত গালিগালাজ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাকিমপাড়ার একটি বাড়ির নিচতলায় আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা রণিতা লামা তার কয়েকজন পরিচিত বন্ধু দীক্ষা থাপা, এলিনা রাই, শ্রেয়া রাই এবং ইন্দ্র ভুজেলকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। তারা সবাই শিলিগুড়িতে পড়াশোনার জন্য এসেছেন। ওই বাড়ির দোতলায় ভাড়া থাকেন লীলা ও রুবি দত্ত। সোমবার কোনো একটি বিষয় নিয়ে লীলা এবং রণিতাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়, যা দ্রুত হাতাহাতিতে পরিণত হয় বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার সন্ধ্যায় রণিতা লামা শিলিগুড়ি থানায় লীলা ও রুবির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ দায়ের করার পরেও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়ায় রণিতার পরিচিত এবং বন্ধুরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। শিলিগুড়ির বিভিন্ন এলাকা এবং এমনকি পাহাড় থেকেও অনেকেই হাকিমপাড়ার ওই বাড়ির সামনে এসে জড়ো হন এবং দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে শিলিগুড়ি পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিলি শীল সিনহা ঘটনাস্থলে আসেন। তার উপস্থিতিতেও বিক্ষোভ অব্যাহত থাকে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় এবং লীলা ও রুবিকে থানায় নিয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকেলের মধ্যেই তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।
রণিতা লামার অভিযোগ, “ওই দুই মহিলা আমাদের সম্প্রদায় তুলে গালিগালাজ করেছেন।” এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনাটি জাতিগত হিংসার দিকে মোড় নিচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি লীলা ও রুবি।
ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা এবং জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। এই ধরনের ঘটনা সমাজে বিভেদ তৈরি করতে পারে বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পুলিশ এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে এবং এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।