শিবের প্রতি অগাধ ভক্তি এবং শৈব তীর্থ ভ্রমণের নেশাই কাল হল হুগলির ত্রিবেণীর বাসিন্দা রাজীব কুণ্ডু (৩৮)-এর জন্য। শ্রাবণ মাসে মহাদেবের দর্শন পেতে তিনি কিন্নর কৈলাস গিয়েছিলেন, কিন্তু সেখান থেকে আর জীবিত ফিরতে পারলেন না। প্রচণ্ড ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টে দুর্গম পাহাড়ি পথে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
গত ১লা আগস্ট হুগলি থেকে পাঁচজন পর্যটকের একটি দল হিমাচল প্রদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল কিন্নর কৈলাস দর্শন। দলের মধ্যে রাজীব-সহ তিনজন দুর্গম পথে গন্তব্যে পৌঁছাতে সক্ষম হন। কিন্তু ফেরার পথে গত মঙ্গলবার রাজীব অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় সূত্রের খবর, হিমাচলের পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টিপাত, ঠান্ডা ও অক্সিজেনের অভাবে তাঁর শরীর খারাপ হতে শুরু করে। দ্রুত তাঁকে বেস ক্যাম্পে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। আজ, বুধবার তাঁর ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।
এই মর্মান্তিক ঘটনার পেছনে উত্তরকাশিতে ধসের প্রভাবকেও দায়ী করা হচ্ছে। রাজীবের পরিবার এখন চরম অসহায় অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তাঁর জামাইবাবু জানান, রাজীবের পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। তিনি কোনোমতে টোটো চালিয়ে সংসার চালাতেন। বাড়িতে তাঁর মা এবং ভাই রয়েছেন।
পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, হিমাচল প্রদেশের প্রশাসন মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তাই তাঁরা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, যাতে রাজীবের মৃতদেহ দ্রুত ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়।
রাজীবের জামাইবাবু বলেন, “ওর শখ ছিল বিভিন্ন শৈব তীর্থে ঘুরতে যাওয়া। শ্রাবণ মাসের আগেই ও অমরনাথ ঘুরে এসেছিল। এরপর কিন্নর কৈলাস যায়। সেখান থেকে ফেরার পথে ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টের কারণে ওর মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। আমাদের পরিবার এখন খুবই অসহায়। তাই হিমাচল প্রশাসন ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে আমাদের আবেদন, আমাদের রাজীবের মৃতদেহ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হোক।”