রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক ইস্যুতে সরব হলেন ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। সোমবার সন্ধ্যায় অশোকনগরের চৌরঙ্গী মোড়ে ‘অধিকার যাত্রা’ নামে একটি সভায় যোগ দিয়ে তিনি তৃণমূল বিধায়ক শওকত মোল্লা, আইপ্যাক, রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন বিষয়ে কড়া মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, “আমি ভাঙড়ে শান্তির কথা বলি। ওনাকে (শওকত মোল্লাকে) ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন ‘নটোরিয়াস ক্রিমিনাল’ সার্টিফিকেট দিয়েছে, কিন্তু আমাকে দেয়নি।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি শওকতের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানেন।
ভবিষ্যতের রাজনৈতিক জোট নিয়ে নওশাদ বলেন, “ভাইজান বলেন রাজ্যের ২৯৪টি আসনেই প্রার্থী দেওয়ার মতো জায়গায় এখনও সংগঠন পৌঁছায়নি। তবে ১০০টিরও বেশি জায়গায় আমরা সংগঠনকে ব্যাপকভাবে তৈরি করেছি। আগামী নির্বাচনে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে আমরা বামফ্রন্ট, জাতীয় কংগ্রেস এবং অন্যান্য যে সমস্ত রাজনৈতিক দল আছে, তাদেরকে নিয়ে একসঙ্গে লড়তে চাই।” এর মাধ্যমে তিনি আসন্ন নির্বাচনে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে একটি বৃহত্তর জোটের ইঙ্গিত দেন।
তৃণমূলের আইপ্যাকের কার্যক্রম নিয়েও নওশাদ তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমার তথ্য সরকারের কাছে যাওয়া উচিত, কোনো রাজনৈতিক দলের সংস্থার কাছে নয়। এটা অন্যায় করছে। নাটক করছে তৃণমূল।” তিনি মনে করেন, মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য রাজনৈতিক দলের সংস্থার কাছে থাকা উচিত নয়।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অমান্য করে রাজ্যের মুখ্যসচিবের চিঠি প্রসঙ্গে নওশাদ বলেন, “আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। কেউ ছাড় পাবে না। আজকে ক্ষমতায় আছে বলে দাম্ভিকতা দেখাতে পারে। আইন বহির্ভূত কাজ যেই করবে, কেউ ছাড় পাবে না।” এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেন।
এছাড়াও, তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুতে কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারকেই দোষারোপ করেন। নওশাদ বলেন, যদি রোহিঙ্গারা রাজ্যে প্রবেশ করে, তবে একদিকে যেমন সীমান্ত পাহারা দেওয়া বিএসএফের ব্যর্থতা, তেমনি রাজ্যে বসবাস করলে তা রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা। তার মতে, ভারত সরকার যেহেতু শরণার্থীদের কার্ড দিচ্ছে, তাই তারা যদি বসবাস করে, তাহলে অন্য কারো এ বিষয়ে কিছু বলার থাকে না।
অশোকনগরে নওশাদ সিদ্দিকীর এই সভা এবং তার কড়া মন্তব্যগুলি রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।