লোকসভা নির্বাচনের পর প্রথমবারের মতো ইন্ডিয়া জোটের নেতারা একত্রিত হচ্ছেন। লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীর ডাকা এক বিশেষ নৈশভোজে যোগ দিতে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস এবং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে দূরত্ব বজায় থাকলেও, এই বৈঠকে অভিষেকের উপস্থিতি জোটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
লোকসভা নির্বাচনের আগে গঠিত ইন্ডিয়া জোট বিজেপির বিপুল জয়ের পর অনেকটাই ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছিল। জোটের অনেক শরিক দলই কংগ্রেসের ‘অহংকারী’ মনোভাব নিয়ে অভিযোগ তুলেছিল। তবে এই ডিনার কূটনীতিকে জোটের ঐক্য রক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয়গুলির মধ্যে একটি হলো কেন্দ্র সরকারের বিতর্কিত ভোটার তালিকা সংশোধন প্রকল্প। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র আন্দোলন শুরু করেছেন। যদিও রাহুল গান্ধী এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি, কংগ্রেস দলগতভাবে এর বিরোধিতা করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে এই ইস্যুটিতে জোর দিতে পারেন।
এছাড়াও, আসন্ন উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং বিরোধীরা বিজেপির বিরুদ্ধে একটি সম্মিলিত লড়াই দিতে চাইছে। এই বৈঠকে বিরোধী শিবিরের প্রার্থী নির্বাচন এবং সরকারের সম্ভাব্য ‘ভেদক প্রার্থী’ কৌশলের মোকাবিলায় রণনীতি সাজানো নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এই বৈঠকে সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং এনসিপি, শিবসেনা ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার মতো দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে। ডিএমকে প্রধান এমকে স্ট্যালিনের অসুস্থতা তার উপস্থিতিতে বাধা দিতে পারে। এই বৈঠকের পরদিন অর্থাৎ শুক্রবার, ইন্ডিয়া জোটের নেতারা যৌথভাবে নির্বাচন কমিশন দফতরে মিছিল করবেন। এই পুরো প্রক্রিয়াটি বিরোধী জোটের ঐক্য ফিরিয়ে আনার এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্ত ভিত গড়ে তোলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।