লালবাজারের ড্রোনে নজরদারি, ঘাটে ঘাটে ফিরহাদ হাকিম! বিজয়া দশমীতে ৫ হাজার প্রতিমা নিরঞ্জনে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা

পুজোর শেষে এবার বিদায়ের পালা। বৃহস্পতিবার বিজয়া দশমী উপলক্ষে শহরে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জনের পর্ব। বারোয়ারি থেকে শুরু করে বাড়ির পুজোর প্রতিমা বিসর্জন চলছে গঙ্গা তীরবর্তী ঘাটগুলিতে। প্রতিমা বিসর্জন যাতে সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়, তার জন্য পুলিশ ও পুর প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে।

কলকাতা পুরনিগমের মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে ঘাটে উপস্থিত থেকে বিসর্জনের তদারকি করেন। পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে লালবাজারের তরফে ড্রোন উড়িয়ে সার্বিক নজরদারি চালানো হচ্ছে।

নিরঞ্জনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা
কলকাতা পুরনিগম ও কলকাতা পুলিশ সম্মিলিতভাবে নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে:

রুট ম্যাপ: বিসর্জন শোভাযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে ২৩৮টি বিশেষ রুট ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি রুটে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী।

বিপর্যয় মোকাবিলা: শহরের প্রতিটি ঘাটেই রয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল, লাইফ সেভিং বোট, মাঝি এবং ডুবুরি।

রিভার ট্রাফিক: কলকাতা পুলিশের রিভার ট্রাফিক পুলিশের কর্মীরা গঙ্গা বক্ষে সবসময় পাহারা দিচ্ছেন। এদিন ও আগামীকাল মিলিয়ে প্রতিটি ঘাটে রিভার ট্রাফিকের ছ’টি স্পিডবোট ও একাধিক ডুবুরি থাকছেন।

পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছর বিজয়া দশমীতে প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিমা নিরঞ্জনের সম্ভাবনা রয়েছে, সেই অনুযায়ী হাজার হাজার পুলিশ কর্মী ডিউটিতে থাকছেন।

পুরসভার তত্ত্বাবধানে বিসর্জন ও মেয়রের আশ্বাস
মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘাটে উপস্থিত থেকে সবাইকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, “আজ বিজয় দশমী। সকাল থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিসর্জনের উপর নজর রেখেছেন। কলকাতা পুরনিগমের সঙ্গে কলকাতা পুলিশ সমন্বয় রেখে কাজ করে চলেছে। ৫ তারিখ পর্যন্ত বিসর্জন চলবে।”

জল জমার সমস্যা: মেয়র জানান, এবার গতবারের থেকে অনেক কম জল জমেছে। গতবার যেখানে যেখানে জল জমেছিল, সেই সমস্ত জায়গায় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন পাম্প বসানো হয়েছে।

বিসর্জন পদ্ধতি: পুলিশ ও পুরনিগমের কর্মীরা একসঙ্গে কাজ করছেন। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্তই সাধারণ মানুষদের যেতে দেওয়া হচ্ছে। এরপর পুরনিগমের কর্মীরাই প্রতিমা নিয়ে সরাসরি নদীতে বিসর্জন দিচ্ছেন। সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাইরে এবং ভিতরে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

অলঙ্কার ও যান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ নজর
শুধু শোভাযাত্রা নয়, প্রতিমার অলঙ্কারের সুরক্ষায়ও বিশেষ নজর রেখেছে পুলিশ। শহরের ১৩টি বড় মণ্ডপে সোনা ও রুপোর গয়নার সুরক্ষায় পৃথক নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রতিটি মণ্ডপে দু’জন রাইফেলধারী পুলিশকর্মী ও অন্তত দু’টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

প্রতিমা নিরঞ্জন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিশেষ যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধর্মতলা, শিয়ালদা, বেলেঘাটা, খিদিরপুর, বালিগঞ্জ ও হাওড়া সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ভারী যান চলাচল বন্ধ থাকবে। রাতের অন্ধকারে কোনও দুর্ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন ঘাটে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং হাই মাস্ট আলো বসানো হয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy