হাওড়ার গ্রামীণ অঞ্চলে ধান, পাট ও সবজি চাষের পাশাপাশি বাগনানের কাঁটাবেড়িয়া, ওরফুলি, হেলেদীপ সহ একাধিক গ্রাম ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। এখানকার কৃষকরা বিশেষত জুঁই, গাঁদা, দোপাটি, গোলাপের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে জবা ফুলের চাষ করেন। এই ফুলের চাহিদা বছরে কয়েকটা মাস বেশ ভালো থাকে, বিশেষ করে দীপান্বিতা কালীপুজোয় জবা ফুলের চাহিদা তুঙ্গে ওঠে।
তবে গত কয়েক বছর ধরে জবা চাষে এক বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে—মিলিবাগ বা দোয়ে পোকার আক্রমণ। এই পোকার আক্রমণে বিঘার পর বিঘা জবার ক্ষেত উজাড় হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে। ফলে অনেকেই জবা ফুলের চাষ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন।
অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েও মিলছে না সমাধান
স্থানীয় কৃষকরা জবা চাষকে এই অঞ্চলের নিজস্ব ফুল বলেই মনে করেন। জবার চাষে লভ্যাংশ তুলনামূলকভাবে কম হলেও, এতে খুব বেশি খরচের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু ইদানিং মিলিবাগের আক্রমণে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় কৃষকদের পুরনো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়েও সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। মিলিবাগের আক্রমণ থেকে জবা ক্ষেত রক্ষা করার চেষ্টা করেও তাঁরা ব্যর্থ হচ্ছেন।
উদ্যান পালন বিভাগের উদ্যোগ
এই পরিস্থিতিতে জবা চাষকে বাঁচাতে এগিয়ে এসেছে উদ্যান পালন বিভাগ। কৃষকদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বাগনানে উদ্যান পালন বিভাগের আয়োজনে একটি বিশেষ শিবির অনুষ্ঠিত হয়।
জেলা উদ্যান পালন আধিকারিক ডঃ রাহুল চক্রবর্তী কৃষকদের কাছে উন্নত ফুল চাষের পদ্ধতির পাশাপাশি জবা চাষের উন্নতি এবং মিলিবাগের আক্রমণ মোকাবিলার বিষয়ে বিস্তারিত পরামর্শ দেন।
কৃষকরা মনে করছেন, উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিকদের দেওয়া টোটকায় যদি সুফল মেলে, তবে বাগনানে আবারও জবা চাষ তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে এবং কৃষকরা লাভের মুখ দেখতে পাবেন।