“লক্ষ্য ছিল, আমার স্ত্রী, মৃত্যুও হতে পারত”-ই-মেলে নালিশ RG Kar -এ নির্যাতিতার বাবার

আরজি কর কাণ্ডের নির্যাতিতার পরিবারের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের অভিযোগ ঘিরে নতুন করে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত শনিবার নবান্ন অভিযানের প্রতিবাদ মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাদের অভিযোগ, ওই মিছিল চলাকালীন পুলিশের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন নির্যাতিতার মা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার শেক্সপিয়র সরণি থানায় ই-মেলের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন নির্যাতিতার বাবা। তিনি পুলিশের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হামলার অভিযোগ তুলে এফআইআর দায়েরের দাবি জানিয়েছেন।

নির্যাতিতার বাবার পাঠানো ই-মেলে বলা হয়েছে, মিছিল চলাকালীন একজন পুলিশকর্মী তাঁর স্ত্রীর মাথায় এবং পিঠে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এর ফলে তার স্ত্রী আহত হন এবং হাতের শাখা ভেঙে যায়। তিনি দাবি করেন, “এটা পূর্বপরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হামলা। এর লক্ষ্য ছিল, আমার স্ত্রীকে গুরুতর আঘাত করা, যাতে তাঁর মৃত্যুও হতে পারত।” আহত অবস্থায় সেদিনই তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে বাড়িতে থাকলেও তিনি এখনও ‘হেড ট্রমা’-তে ভুগছেন বলে দাবি করেছেন তার স্বামী।

যদিও এই ঘটনার পর কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা রবিবার জানিয়েছিলেন, “ওঁর (নির্যাতিতার মা) আঘাত অনভিপ্রেত ঘটনা। উনি চাইলে অভিযোগ জানাতে পারেন। না-হলেও আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।” কিন্তু নির্যাতিতার বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ এফআইআর দায়ের করবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

অন্যদিকে, শনিবারের নবান্ন অভিযানের ঘটনায় নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে লালবাজার। নিজেদের এক্স হ্যান্ডেল এবং ফেসবুক পেজে তারা জানিয়েছে, মিছিলকারীদের বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে চারটি নিউ মার্কেট থানায় এবং একটি হেয়ার স্ট্রিট থানায়। লালবাজারের দাবি, বিক্ষোভকারীরা কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ের পরিবর্তে পার্ক স্ট্রিটের দিকে চলে গিয়েছিল। এছাড়াও, হকার ইউনিয়নের অফিসে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, একটি রাজনৈতিক দলের রাখির স্টলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং একজন সংবাদকর্মীর ক্যামেরা ভাঙার অভিযোগও এনেছে পুলিশ।

তবে লালবাজার এও জানিয়েছে যে, এসব মামলায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং তদন্ত চলছে। পুলিশের এই ব্যাখ্যা সত্ত্বেও, আরজি করের নির্যাতিতার পরিবারের উপর হামলার অভিযোগ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। বিরোধী মহল এই ঘটনাকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy