দুর্গাপূজা কার্নিভালের দিন অর্থাৎ ৫ অক্টোবরই শহরে মিছিল ও সমাবেশের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সম্প্রতি শহরে বৃষ্টির জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১২ জনের মর্মান্তিক মৃত্যুর প্রতিবাদে ‘খোলা হাওয়া’ নামে একটি সংগঠনের কর্মসূচির আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরী। এই মিছিলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
বিচারপতি যা বললেন:
কার্নিভালের দিন মিছিলের আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরী বলেন, “৫ অক্টোবর দুর্গাপূজা কার্নিভাল রয়েছে ঠিকই। কিন্তু ১২ জনের মৃত্যুও অত্যন্ত দুঃখজনক। সেই জন্য মিছিলের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।”
বিচারপতি তাঁর নির্দেশে স্পষ্ট জানিয়েছেন:
কার্নিভাল থাকায় মিছিল হবে বেলা ২টো থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
মিছিলের রুট কী হবে, তা কলকাতা পুলিশ ঠিক করে দেবে।
মিছিলে আবেদন করা ৫০০০ জনের বদলে ৩০০০ জন সমর্থক নিয়ে এই কর্মসূচি পালন করা যাবে।
‘খোলা হাওয়া’ সংগঠন কলেজ স্কোয়ার থেকে ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল করার আবেদন করলেও, আদালত সেই রুট মানেনি।
আদালতে চরম উত্তপ্ত পরিস্থিতি:
এই আবেদনের শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবী ও তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্যের মধ্যে তীব্র বাক-বিতণ্ডা হয়।
রাজ্যের পক্ষে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় আবেদন খারিজের দাবি জানিয়ে বলেন, “এটা একটি রাজনৈতিক সংগঠন। স্বপন দাশগুপ্ত, শুভেন্দু অধিকারী, শঙ্কুদেব পণ্ডা— এই হুলিগানরা যেখানে থাকবে সেখানেই ঝামেলা হবে… সরকারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার জন্য এটা করা হচ্ছে।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, কেন ৫ অক্টোবরই এই কর্মসূচি নিতে হবে?
জবাবে বিচারপতি চৌধুরী মন্তব্য করেন, “কিন্তু মৃত্যুর ঘটনাও তো কিছুদিন আগেই ঘটেছে!”
এরপর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিল্বদল ভট্টাচার্যের উদ্দেশে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলে আইনজীবীদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়। বিল্বদল ভট্টাচার্য সওয়াল করেন, বিদেশিরা আসবে বলে ১২-১৩ জনের মৃত্যুর প্রতিবাদ করার অধিকার অস্বীকার করা যায় না।
উল্লেখ্য, ‘খোলা হাওয়া’ গত ২৭ সেপ্টেম্বর পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন করলেও, কার্নিভালের কারণ দেখিয়ে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। এরপরই বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা সংগঠনের পক্ষ থেকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।