‘রাস্তায় সময় নষ্ট হচ্ছে, কাজ হোক বাড়ি থেকে’! বেঙ্গালুরুকে ফিক্স না করা পর্যন্ত আইটি কর্মীদের ‘WFH’ চেয়ে সরাসরি কর্ণাটক সরকারের কাছে BCP-এর দাবি!

যানজট আর খানাখন্দে ভরা বেঙ্গালুরুর রাস্তা এখন নিত্যযাত্রীদের কাছে এক চরম ভোগান্তির কারণ। ব্যস্ত সময়ে অফিস পৌঁছনো যেন কোনও যুদ্ধ জয়ের চেয়ে কম নয়। এই নিত্যদিনের হয়রানিতে বীতশ্রদ্ধ হয়ে এবার সমাজমাধ্যমেই ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বেঙ্গালুরুতে কর্মরত তথ্যপ্রযুক্তি (IT) কর্মী অমরনাথ শিবশঙ্কর। তাঁর এই প্রস্তাব ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে।

সরকারের কাছে BCP চালুর দাবি:
অমরনাথ শিবশঙ্কর কর্ণাটক সরকারের প্রতি ব্যবসায়িক ধারাবাহিকতা পরিকল্পনা (BCP) চালু করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, বেঙ্গালুরুর রাস্তাঘাট এবং নিষ্কাশন ব্যবস্থার মেরামতের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হোক। কিন্তু তার আগে পর্যন্ত, অর্থাৎ রাস্তাঘাটের সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, আইটি কোম্পানিগুলিকে কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার (Work from Home বা WFH) অনুমতি দিতে হবে।

‘এক্স’ (পূর্বে ট্যুইটার)-এ অমরনাথ লেখেন, “কোভিডের সময় আউটার রিং রোড, আইটিপিএল, ইলেকট্রনিক সিটি, মান্যতা টেক পার্ক ইত্যাদি এলাকার আইটি কোম্পানিগুলি কর্মীদের সম্পূর্ণভাবে ‘রিমোট’ মডেল অবলম্বন করেছিল। সরকার যদি সেই সময় আইটি সংস্থাগুলিকে এই নির্দেশ দিতে পারে, তাহলে এখনও তা পারবে। অফিস যেতে গিয়ে কর্মীদের যে সময় নষ্ট হচ্ছে, ওই সময়টাকে তাঁরা কোম্পানির জন্যই গঠনমূলক কাজে লাগাতে পারবে।”

আইটি পার্ক বন্ধ করাই কি সমাধান?
অমরনাথের এই পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই তাঁর প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছেন। এক ইউজার মন্তব্য করেন, “বাড়ি ঠিক না করা পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাজ করো। #FixBengaluru হয়তো শহরের সেরা অবকাঠামো পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে পারে।” আরেকজন লেখেন, “সরকার যদি মানুষের প্রতি আন্তরিক হয়, তবে এভাবেই কাজ করা উচিত।”

তবে এই প্রস্তাবের বিরোধিতাও করেছেন বহু নেটিজেন। এক ব্যবহারকারীর বক্তব্য, এই সমাধানের বাস্তবসম্মত কিছু সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, “কোভিডের মতো বর্তমানে আমরা বিশ্বব্যাপী সংকটে নেই। তাই মূল কোম্পানিগুলি (GCC) চায় তাদের কর্মীরা কেবল ভারতেই নয়, বিশ্বব্যাপী অফিস থেকেই কাজ করুক।”

পাশাপাশি, আরও একজন ইউজার অর্থনীতি ও স্থানীয় ব্যবসার উপর WFH-এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেন, “আইটি পার্কগুলি বন্ধ হয়ে গেলে হোটেল, খাবারের দোকান এবং পিজি-র মতো স্থানীয় ব্যবসাগুলি প্রভাবিত হবে। মানুষ গাড়ি বা দুই চাকার গাড়ি কেনা বন্ধ করে দেবে এবং অটোমোবাইল শিল্প আবার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোনও গ্রাহক না থাকার কারণে ভাড়া বাজার এবং রিয়েল এস্টেট বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”

সব মিলিয়ে বেঙ্গালুরুর অবকাঠামোগত দুর্দশা নিয়ে শুরু হওয়া এই আলোচনা এখন WFH নীতির বাস্তবায়ন এবং তার অর্থনৈতিক প্রভাবের দিকে মোড় নিয়েছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy