খুচরো ব্যবসা ও পরিষেবা খাতে বড় পরিবর্তন আনতে মহারাষ্ট্র সরকার রাজ্যের সমস্ত ধরনের দোকান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে (মদ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান বাদে) সপ্তাহে সাত দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে। শিল্প, জ্বালানি, শ্রম ও খনি দফতর থেকে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে মুম্বই, পুনে, নাগপুরের মতো বড় শহরগুলিতে রাতের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থান বাড়বে বলে মনে করছেন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা।
বিভ্রান্তি দূর করতে সরকারের হস্তক্ষেপ
রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ২০১৭ সালের মহারাষ্ট্র শপস অ্যান্ড এস্টাব্লিশমেন্টস আইন অনুযায়ী ব্যবসা ২৪ ঘণ্টা চালানোর সুবিধা আগেই কার্যকর ছিল। কিন্তু সম্প্রতি একাধিক ব্যবসায়ী সংগঠন অভিযোগ জানায় যে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ কর্তৃপক্ষ অনেক সময় ২৪ ঘণ্টা ব্যবসা চালাতে বাধা দিচ্ছে। এই আইনি বিভ্রান্তি দূর করতেই সরকার নতুন করে এই নির্দেশিকা জারি করল।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে তারা আর কোনোভাবেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বাধা দিতে পারবে না। বরং এই নীতি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
কোন প্রতিষ্ঠানগুলি বাদ পড়ল?
মহারাষ্ট্রের প্রায় সব দোকানপাট ও প্রতিষ্ঠান এখন থেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে পারলেও, অ্যালকোহল বিক্রি বা পরিবেশন করা হয়—এমন প্রতিষ্ঠানগুলি (যেমন: পারমিট রুম, বিয়ার বার, ওয়াইন শপ ইত্যাদি) এই নিয়মের আওতায় আসবে না। এছাড়াও, আগে থিয়েটার ও সিনেমা হলও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চালানোর বাধ্যবাধকতায় ছিল, নতুন নির্দেশনায় সেগুলোও আর সীমাবদ্ধতার মধ্যে রাখা হয়নি।
কর্মীদের স্বার্থরক্ষায় বাধ্যতামূলক নিয়ম
যদিও ব্যবসা ২৪ ঘণ্টা চলবে, তবুও কর্মীদের স্বার্থরক্ষার জন্য এই নির্দেশিকায় কিছু বাধ্যতামূলক নিয়ম রাখা হয়েছে:
১. সাপ্তাহিক ছুটি: প্রতিটি কর্মচারীকে অবশ্যই টানা ২৪ ঘণ্টার সাপ্তাহিক ছুটি দিতে হবে।
২. শ্রম আইন: শ্রম আইনের আওতায় এই শর্ত পূরণ করা না হলে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি মহল ও বাণিজ্য মহলের মতে, খুচরা বাজার, খাদ্যপণ্য, ফ্যাশন, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন অর্ডার-ভিত্তিক পরিষেবা খাতে এর বড় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। পর্যটন শিল্পও এর ফলে উপকৃত হবে। বিশ্বের বহু বড় শহরের মতো মহারাষ্ট্রেও এখন অর্থনীতির গতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
মহারাষ্ট্র সরকারের এই ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার সিদ্ধান্তে কর্মীদের সাপ্তাহিক ছুটির শর্তটি ঠিকমতো মানা হবে কি? আপনার কী মনে হয়?