জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতিতে তীব্র অস্থিরতা। রাজ্যসভা আসন ভাগাভাগি নিয়ে মতবিরোধের জেরে ন্যাশনাল কনফারেন্স (NC) এবং কংগ্রেসের মধ্যে পুরনো জোটে বড়সড় ফাটল ধরেছে। সূত্রের খবর, কংগ্রেস এখন ন্যাশনাল কনফারেন্সের সঙ্গে জোট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সরে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ‘গুরুত্ব সহকারে’ ভাবছে।
যদিও আপাতত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সরকারে (NC-র হাতে ৪১ জন বিধায়ক এবং সহযোগী ৫ জন নির্দল ও ১ জন সিপিএম বিধায়কের সমর্থন) তাৎক্ষণিক কোনো সংখ্যা-সংকট তৈরি হচ্ছে না। কারণ, ৬ আসন থাকা কংগ্রেস জোট থেকে বেরিয়ে গেলেও সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতার (৪৫ জন বিধায়ক) জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন মজুত রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিকভাবে এটি জোটের জন্য বিশাল অস্বস্তি।
আস্থা ভঙ্গের অভিযোগ কংগ্রেসের
অশান্তির মূল কারণ একটি ‘নিরাপদ আসন’। জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তারিক হামিদ কারা এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে ক্ষোভের সঙ্গে জানান, “ফারুক আবদুল্লা সোনিয়া গান্ধীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কংগ্রেসকে এক নিরাপদ আসন দেবেন। কিন্তু পরে এনসি একতরফা ভাবে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করে। এতে আমাদের আস্থা ভঙ্গ হয়েছে।”
কংগ্রেস নেতৃত্ব আরও অভিযোগ করে, জোট সরকারের কাজের ধরণ নিয়েও তাদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ আছে। কোনো সমন্বয় কমিটি না থাকা এবং একতরফা সিদ্ধান্তের কারণে সকলেই জোট থেকে বেরিয়ে আসার পক্ষে।
চারটি আসনেই এনসি প্রার্থী, ওমরের তীব্র কটাক্ষ
রাজ্যসভায় জম্মু-কাশ্মীরের মোট চারটি আসন। এনসি-র শক্তি অনুযায়ী তাদের তিনটি আসন প্রায় নিশ্চিত। বাকি একটি আসন নিয়েই ছিল কংগ্রেস ও বিজেপির লড়াই। কংগ্রেস সেই আসনটিকে নিরাপদ মনে না করায় নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এই সুযোগে এনসি চারটি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে।
জোট ভাঙার এই ডামাডোলের মাঝেই ওমর আবদুল্লা তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এটাই হবে প্রকৃত পরীক্ষা, কে বিজেপির পাশে দাঁড়ায়, আর কে নয়।” তিনি আরও বিস্ফোরক মন্তব্য করে বলেন, “বিজেপি একটিও আসন জিততে পারবে না ঘোড়াবেচা ছাড়া। তাদের কাছে ২৮টি ভোট আছে, জয়ের জন্য চাই ৪০। তাই টাকার ও প্রভাবের জোরেই ভোট কিনতে হবে।”
ফারুক আবদুল্লার সঙ্গে সোনিয়া গান্ধী ও মল্লিকার্জুন খাড়্গের বৈঠক সত্ত্বেও কোনো সমঝোতা না হওয়ায়, কংগ্রেস শেষ পর্যন্ত জোট থেকে সরে আসার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।