আসন্ন রাখিবন্ধন উৎসবে বোনেরা তাদের ভাইয়ের সুরক্ষা এবং মঙ্গল কামনায় ঐতিহ্যবাহী বৈদিক রাখি ব্যবহার করতে পারেন। প্রচলিত রাখির চেয়ে বৈদিক রাখির গুরুত্ব ও শক্তি অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। এটি সহজেই বাড়িতে তৈরি করা সম্ভব।
বৈদিক রাখি তৈরির উপকরণ:
বৈদিক রাখি তৈরি করতে পাঁচটি জিনিসের প্রয়োজন হয়: দূর্বা (এক প্রকার ঘাস), অক্ষত (চাল), জাফরান, চন্দন এবং সরিষার বীজ। এই সমস্ত উপকরণ একটি হলুদ রেশমের কাপড়ে বেঁধে কলাই সুতো দিয়ে বাঁধা হয়। এটিই ‘বৈদিক রাখি’ নামে পরিচিত। দূর্বার ব্যবহার গণেশের অত্যন্ত প্রিয় বলে মনে করা হয়, যা ভাইয়ের জীবনের সমস্ত বাধা দূর করতে সাহায্য করে।
বৈদিক রাখির গুণাগুণ:
বৈদিক রাখি কেবল ভাই ও বোনের মধ্যে ভালোবাসা এবং সুরক্ষার প্রতীক নয়, এটি আবেগ এবং সংকল্পের একটি প্রতিরক্ষামূলক ঢাল হিসেবে কাজ করে। মনে করা হয়, এই রাখি ভাইকে দীর্ঘ জীবন, সাহস এবং বীরত্ব প্রদান করে এবং নেতিবাচক শক্তি থেকে রক্ষা করে।
বৈদিক রাখি বাঁধার মন্ত্র:
বৈদিক রাখি বাঁধার সময় একটি বিশেষ মন্ত্র উচ্চারণ করতে হয়:
‘যেন বদ্ধো বালি রাজা দানবেন্দ্র মহাবলঃ। দশ ত্বাম অভিবাধনমি রক্ষা মা চল মা চল’।
এই মন্ত্রের অর্থ হলো, “যে রাখিটি তাঁর বাক্যে পরাক্রমশালী অসুররাজ বালিকে আবদ্ধ করেছিল, আমি সেই একই রাখি তোমাকেও বেঁধে দিচ্ছি। তুমি সুরক্ষিত থাকো। এই সুতো যেন ছিঁড়ে না যায় এবং তোমার শক্তি বৃদ্ধি পায়।” বোনেদের তাদের ভাইদের রাখি বাঁধার সময় এই সংকল্প করা উচিত।
রাখিবন্ধনের সময়:
আচার্য ব্রজমোহন পাণ্ডের মতে, এই বছর রাখিবন্ধনে বোনেরা তাদের ভাইদের সারাদিন রাখি বাঁধতে পারবেন। ভাদ্র শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের চতুর্দশী তিথি অর্থাৎ ৮ আগস্ট দুপুর ১:৪১ মিনিটে উদিত হবে, যা পরের দিন দুপুর ১:৩২ মিনিট পর্যন্ত চলবে। যেখানে পূর্ণিমা তিথি ৮ আগস্ট দিনের ১:৪২ মিনিট থেকে পরের দিন অর্থাৎ ৯ আগস্ট দিনের ১:২৩ মিনিট পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। এমন পরিস্থিতিতে, উদয় তিথিকে প্রাধান্য দিয়ে ৯ আগস্ট রাখিবন্ধন উৎসব পালিত হবে। এই দিনে ভাদ্রের কোনো প্রভাব থাকবে না, যা উৎসব পালনের জন্য শুভ।
এই রাখিবন্ধনে বৈদিক রাখির ব্যবহার ভাই-বোনের সম্পর্ককে আরও গভীর এবং পবিত্র করে তুলবে বলে বিশ্বাস করা হচ্ছে।