রহড়া অস্ত্রভাণ্ডার, মধুসূদনের ফ্ল্যাটে মহিলাদের আনাগোনা, স্কুটিতে চলত অস্ত্র পাচার

উত্তর ২৪ পরগনার রহড়ায় একটি অভিজাত আবাসন থেকে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ উদ্ধারের ঘটনায় নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। তদন্তে জানা গেছে, ধৃত মধুসূদন ওরফে লিটনের ফ্ল্যাটে অপরিচিত মহিলাদের নিয়মিত আনাগোনা ছিল এবং তাদের মাধ্যমেই অস্ত্রের কেনাবেচা ও পাচার চলত। ব্যারাকপুর কমিশনারেটের গোয়েন্দারা মনে করছেন, এই নারীরা অস্ত্র আনা-নেওয়ার কাজে জড়িত ছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মধুসূদন নিজের স্কুটির সিটের নিচে করে অস্ত্র ও কার্তুজ সরবরাহ করতেন। ফ্ল্যাটের আবাসিকদের সন্দেহ হলে তিনি ওই মহিলাদের ‘কাজের লোক’ বা ‘রান্নার লোক’ হিসেবে পরিচয় দিতেন। তবে, কিছু দিন পরপর ওই মহিলারা বদলে যাওয়ায় বাসিন্দাদের সন্দেহ আরও বাড়ে। আবাসিকরা তাকে ফ্ল্যাট থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও তার আগেই পুলিশ তাকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রসহ গ্রেফতার করে।

ব্যারাকপুরের গোয়েন্দা প্রধান চারু শর্মা জানান, সোমবার রহড়ার রিজেক্ট পার্ক এলাকার ‘প্রতিভা মঞ্জিল’ নামের ওই আবাসন থেকে একাধিক অত্যাধুনিক দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র, হাজারেরও বেশি কার্তুজ এবং ১০ কেজি ৭০০ গ্রাম প্রাচীন মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্রের মতো ‘ফ্যাক্টরি মেড’।

পুলিশের জেরায় মধুসূদন স্বীকার করেছেন যে তার সুদের ব্যবসার আড়ালে অস্ত্রের অবৈধ কারবার চলত। এই অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে তদন্তকারীরা বিহারের সঙ্গে একটি যোগসূত্রের সম্ভাবনা দেখছেন। গোয়েন্দা প্রধান চারু শর্মা বলেন, “আমরা সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখছি এবং আন্তঃরাজ্য অস্ত্র পাচার চক্রের সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র আছে কিনা, তা জানার চেষ্টা করছি। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রগুলো ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।”

তদন্তে আরও জানা গেছে, মধুসূদন তার বেআইনি কর্মকাণ্ড গোপন রাখার জন্য ঘন ঘন বাসস্থান বদলাতেন। সোদপুর ও পানিহাটি হয়ে তিনি রহড়ার এই ফ্ল্যাটে এসেছিলেন। কিন্তু আবাসিকদের সন্দেহের কারণে তিনি এই ফ্ল্যাটও ছাড়ার পরিকল্পনা করছিলেন। তার আগেই পুলিশ তাকে ধরে ফেলে। এই ঘটনা রহড়ার মতো শান্তিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

Related Posts

© 2025 Tips24 - WordPress Theme by WPEnjoy